এবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বিরদ্ধে পার্লামেন্টে বিক্ষোভ

মালয়েশিয়ার ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ দেশজুড়ে চলছে বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভে এবার শামিল হয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় আইনসভার বিরোধীদলীয় এমপিরা।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার মালয়েশিয়ার প্রধান বিরোধী নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বে দেশটির কেন্দ্রীয় আইনসভা ভবনে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন দেশটির অন্তত ১০৭ জন আইনপ্রণেতা।
তবে সেই মিছিল বেশিদূর এগোতে পারেনি। অল্প সময়ের মধ্যেই পার্লামেন্টারি পুলিশ তা রুখে দেয়।
মিছিল স্থগিতের পর পুলিশের উপস্থিতিতে পার্লামেন্ট ভবনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, ‘মুহিউদ্দিন ইয়াসিনকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং গত ১৭ মাস ধরে স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও সামাজিক খাতে যে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে- তা নিরসনের এক মাত্র উপায় তার পদত্যাগ।’
করোনা মাহামরি মোকাবেলায় ব্যর্থতা, স্বেচ্ছাচারিতা, মহামারি পরিস্থিতিতে অর্থনীতি পুনর্গঠনে সঠিক নির্দেশনা দিতে না পারা এবং অযৌক্তিকভাবে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরামর্শ দেওয়ার অভিযোগে মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের পদত্যাগের দাবিতে মালয়েশিয়াজুড়ে বিক্ষোভ চলছে।
মুহিউদ্দিনের পক্ষের লোকজন যদিও বলছেন, দেশের করোনা মহামারির কারণে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে, কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ- প্রধানমন্ত্রীর পদ সুরক্ষিত রাখতে মহামারির অজুহাত টানছেন তিনি ও তার পক্ষের লোকজন।
মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকারব্যবস্থার দেশ মালয়েশিয়ায় এখনও রাজতন্ত্রের প্রচলন আছে। মালয়েশিয়ার রাজা দেশটির সরকারের আলঙ্করিক প্রধান। তবে দেশে জরুরি অবস্থা জারির ক্ষমতা এখনও তিনি রাখেন; কিন্তু এক্ষেত্রে তাকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করতে হয়।
মালয়েশিয়ার বর্তমান রাজা সুলতান আব্দুল্লাহ সুলতান আহমাদ শাহ সম্প্রতি অভিযোগ করেছেন, দেশে জরুরি অবস্থা জারির বিষয়ে তাকে ভুল পরামর্শ দিয়েছিলেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। গত সপ্তাহে এ কারণে প্রধানমন্ত্রীকে ভর্ৎসনাও করেছেন তিনি, যা দেশটির রাজনীতির ইতিহাসে বিরল।
২০২০ সালের মার্চে পার্লামেন্টে একদমই অল্প ভোটের ব্যবধানে জয়ী মালয়েশিয়ার বর্তমান ক্ষমতাসীন জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন মুহিউদ্দিন ইয়াসিন। জোটের প্রধান শরিক মালয়েশিয়ার বৃহত্তম রাজনৈদিক দল ইএমএনও সে সময় তাকে সমর্থন দিয়েছিল। তবে গত জুলাই মাসের শুরুর দিকে সেই সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছে দলটি।
মালয়েশিয়ার সরকারব্যবস্থা ও সংবিধানবিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এ পরিস্থিতিতে পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের আয়োজন করতে হবে। যদি মুহিউদ্দিন ইয়াসিন সেই ভোটে জিততে পারেন, তবেই তিনি এবং তার মন্ত্রিসভার সব সদস্য সুরক্ষিত থাকবেন।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হওয়া পার্লামেন্টের জরুরি অধিবেশন সম্প্রতি শেষ হয়েছে; তবে আস্থা ভোট কবে নাগাদ আয়োজন করা যেতে পারে, সে বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত অধিবেশনে গৃহীত হয়নি।
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ