তিন দেশের কূটনীতিক বহিষ্কার করেছে রাশিয়া

পুতিনের সমালোচক হিসেবে পরিচিত রাশিয়ার বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির মুক্তির দাবিতে দেশটিতে চলমান আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে ইউরোপের তিন দেশ; জার্মানি, সুইডেন ও পোল্যান্ডের কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে মস্কো। সম্প্রতি নাভালনিকে কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে বলেছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) জোটভূক্ত এই তিন দেশের কূটনীতিকরা গত ২৩ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ‘বেআইনি বিক্ষোভ সমাবেশে’ অংশ নিয়েছিলেন। ওই কূটনীতিকদের নিজ নিজ দেশ ছাড়াও যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং ইইউ এই বহিষ্কারের নিন্দা জানিয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল মস্কোতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে দেখা করার মাত্র কয়েক ঘন্টা পরে এই বহিষ্কারাদেশের ঘোষণা আসে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ ও ৩১ জানুয়ারি রাশিয়ায় নাভালনির সমর্থনে দেশজুড়ে লাখো মানুষের বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এরপর ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে পুলিশ। প্রায় দেড় হাজার বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তার হয়েছেন।
পুতিনের কট্টর সমালোচক নাভালনিকে গত আগস্টে বিষপ্রয়োগ করে হত্যার চেষ্টা করা হয়। তখন জার্মানিতে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর সাত বছরের পুরনো মামলায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে সাড়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন মস্কোর একটি আদালত।

কূটনৈতিক বহিস্কারের প্রতিক্রিয়া
জার্মানি এই বহিষ্কারাদেশ ‘কোনোভাবেই ন্যায়সঙ্গত’ নয় বলে তীব্র নিন্দার সঙ্গে হুমকি দিয়ে বলেছে, রাশিয়া যদি কূটনীতিক বহিস্কারের এই আদেশ পুনর্বিবেচনা না করে তাহলে এর ‘উত্তর না দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হবে না।’
জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল মস্কোর কূটনীতিক বহিষ্কারের এমন পদক্ষেপকে অন্যায় আখ্যা দিয়ে এতে করে রাশিয়া আইনের শাসন থেকে আরেক ধাপ সরে গেল বলে এর কঠোর সমালোচনা করেছেন।
সুইডেন গত ২৩ জানুয়ারি তাদের কূটনীতিকের বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অভিযোগকে ভিত্তিহীন হিসেবে অভিহিত করে জানিয়েছে, মস্কোর এমন সিদ্ধান্তের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার সংরক্ষণ করে তারা।
পোল্যান্ড জানিয়েছে, কূটনীতিক বহিষ্কারের ফলে ‘দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সঙ্কট আরও গভীর হতে পারে’।
জার্মানি ও পোল্যান্ড উভয় দেশই জানিয়েছে যে, তারা তাদের কূটনীতিক বহিষ্কারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার জন্য তাদের নিজ নিজ দেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছে। এটা ‘ইটের বদলে পাটকেল ছোড়ার’ মতো পদক্ষেপই বটে। এতে করে আরও কিছু কূটনীতিকদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
এএস