ট্রাইব্যুনালে ভিডিও প্রদর্শনী, এজলাসে আবেগঘন পরিবেশ

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজলাসে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে নিহত-আহতদের ভিডিও প্রদর্শনীর সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এসময় অনেকের চোখের কোণে জল আসতে দেখা যায়। কেউবা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন। স্থির থাকতে পারেননি আসামি থেকে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তার চোখের কোণেও পানি দেখা যায়। ভিডিও প্রদর্শনীর সময় মুহূর্তেই নিস্তব্ধ হয়ে ওঠে চারপাশ। যেন চোখের সামনেই ফুটে উঠেছে বাস্তব চিত্র।
রোববার (৩ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এজলাসে জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে নিহত-আহতদের ভিডিও প্রদর্শনীর সময় এমন আবেগঘন দৃশ্যের অবতারণা হয়।
এদিন বেলা সোয়া ১১টায় এজলাসে ওঠেন ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সূচনা বক্তব্যের শুরুতে রাষ্ট্রপক্ষে কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এরপর সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
আরও পড়ুন
সূচনা বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে দুটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। যা ছিল জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত-আহতদের নিয়ে। এসময় ভিডিও দেখে এজলাসে থাকা আইনজীবী, সাংবাদিকদের চোখে পানি টলমল করতে দেখা যায়। দীর্ঘশ্বাস ফেলেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। এমনকি ভিডিও দেখে পুলিশ সদস্যরাও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
এদিন সকালে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় এ মামলার রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ। কিন্তু অন্যদিনের মতো আজ তার হাতে হাতকড়া কিংবা মাথায় হেলমেট পরানো হয়নি। ট্রাইব্যুনালে আনার পর প্রথমে তাকে হাজতখানায় রাখা হয়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ একাই ছিলেন। বেলা ১১টার পর তোলা হয় কাঠগড়ায়। এরপর বিচারকাজ শুরু হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আজ প্রথম দিনের মতো সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সোমবার (৪ আগস্ট) অনুষ্ঠিত হবে। ট্রাইব্যুনালে আজ সাক্ষী দেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মন। তিনি চব্বিশের ১৮ জুলাই থেকে পুরো আন্দোলনের ঘটনা তুলে ধরেন। পরে তাকে জেরা করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে সরকারি খরচে নিয়োগ পাওয়া আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে আরও ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম, মিজানুল ইসলাম, মইনুল করিম, সাইমুম রেজা তালুকদারসহ অন্যরা।
এদিকে, জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ঘিরে এই প্রথম নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছিল। সকাল থেকে বাড়তি নজরদারি ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরাও তৎপর ছিলেন।
এমএইচডি/এসএসএইচ