শ্রমবাজার খুলতে বৈঠকে বসছে ঢাকা-কুয়ালালামপুর

বাংলাদেশিকর্মীদের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলা নিয়ে বৈঠকে বসছে ঢাকা ও কুয়ালালামপুর। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) শ্রমবাজার খোলা নিয়ে গঠিত যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র বলছে, ঢাকার পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ ও কুয়ালালামপুরের পক্ষে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারভানান বৈঠকের সূচনা করবেন। এরপর যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্যরা শ্রমবাজার খোলা সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করবেন।
সম্প্রতি মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এক ইমেইল বার্তায় যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপকে বৈঠক বসতে প্রস্তাব দেয়। সেই প্রস্তাবে রাজি হয়েই আজ উভয়পক্ষ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে।
দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা শ্রমবাজার খোলা সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে আশাবাদী ঢাকা। আশা করা হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর পুনরায় কর্মী নেওয়ার বিষয়ে বার্তা দেবে মালয়েশিয়া।
বৈঠকে দেশটিতে কর্মী পাঠানো ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিষয় তুলে ধরবে ঢাকা। বিশেষ করে শূন্য অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী পাঠানো ও করোনায় আটকে পড়াদের যাতে দ্রুত কর্মস্থলে (মালয়েশিয়া) ফিরিয়ে নেওয়া হয়- সেই বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হবে।
বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির অন্যতম বাজার মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর পথ বন্ধ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে। মূলত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার একটি সংঘবদ্ধ চক্রের একচেটিয়া বাজার নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে হঠাৎ কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় দেশটি। পরে অবশ্য ঢাকার কূটনৈতিক তৎপরতায় দেশটি বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার খোলার আশ্বাস দেয়। এ নিয়ে ঢাকা-কুয়ালালামপুরের মধ্যে বেশ কয়েকবার মন্ত্রী ও সচিব পর্যায়ে সফর, বিনিময় ও জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটি গঠন করা হলেও পথ খোলেনি। এখনও দেশটিতে বাংলাদেশিদের জন্য শ্রমবাজার বন্ধ রয়েছে।
২০১৯ সালের শেষের দিকে বাংলাদেশিদের জন্য দেশটির শ্রমবাজার খুলে দেওয়া নিয়ে আশার আলো দেখা যায়। তবে দেশটির ক্ষমতার পালাবদলে সে আলো হঠাৎ নিভে যায়।
অন্যদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে মালয়েশিয়াজুড়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে রিকভারি মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার (আরএমসিও) জারি করা হয়। এতে দেশটিতে থাকা অনিবন্ধিত অভিবাসীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ক্লাস্টার চিহ্নিত হওয়ার পর বাংলাদেশসহ প্রায় ১২টি দেশের নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। যা গত ৩১ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা ছিল। আরএমসিও শেষ হওয়ার আগে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে দেশটি আবারও লকডাউন ঘোষণা করে। এ কারণে দেশে আটকা পড়া বাংলাদেশিকর্মীরা কর্মস্থলে যেতে পারছে না।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার হাজনাহ মো. হাশিম পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সাক্ষাতে আসেন। এ সময় মন্ত্রী দেশে এসে করোনার কারণে আটকে পড়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের মালয়েশিয়ায় ফিরিয়ে নিতে দেশটিকে অনুরোধ করেন। হাইকমিশনার হাজনাহ এ বিষয়ে মন্ত্রীকে আশ্বাস দেন।
এর আগে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেন হাইকমিশনার হাজনাহ। প্রতিমন্ত্রীও আটকে পড়াদের ফিরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন।
এনআই/এসএসএইচ