আফতাবনগরকে আধুনিক এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে চান আলমগীর ঢালী

জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটি নির্বাচনে ছাতা প্রতীক নিয়ে আলমগীর ঢালী-এস এম কামাল পরিষদ থেকে সভাপতি প্রার্থী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ঢালী বলেছেন, অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে, এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানীর বুকে একটি আধুনিক ও সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে আফতাবনগরকে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।
বৃহস্পতিবার রাতে আফতাবনগরে জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটির আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যে ছাতা প্রতীকে পূর্ণ প্যানেলের কেন্দ্রীয় নির্বাচনী সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে এ নির্বাচনে মোট ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদের প্রার্থীরা ভোটারদের সঙ্গে পরিচিত হন এই সভায়।
ওই সভায় সভাপতি প্রার্থী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ঢালী বলেন, আমরা গড়ে তুলতে চাই একটি সুপরিকল্পিত আফতাবনগর। যেখানে থাকবে উন্নত রাস্তাঘাট, সুন্দর অবকাঠামো, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, প্রতিটি ব্লকে থাকবে মসজিদ, নিরাপদ যোগাযোগ ও গণপরিবহনের ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে থাকবে খেলার মাঠ ও বিনোদনের ব্যবস্থা, ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে থাকবে শহীদ মিনার, স্থায়ী কাঁচা বাজার, ঈদগাহ, কবরস্থান, আফতাবনগর এবং বনশ্রীর মধ্যে সংযুক্ত বেইলি ব্রিজ, আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। পাশাপাশি হিন্দু ভাইদের জন্য থাকবে উপাসনালয়। আমরা নিশ্চিত করতে চাই মশক ও দূষণমুক্ত, সবুজায়নের আফতাবনগর। আফতাবনগরবাসীর জন্য রাখতে চাই আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা।

তিনি আরও বলেন, আফতাবনগরের পারিপার্শ্বিক অবস্থার উন্নয়নের শুভ সংকল্প নিয়ে আমরা আপনাদের কাছে এসেছি। ছাতা প্রতীকে আমরা উন্নয়ন করার লক্ষ্যে আমাদের যে যাত্রা, তা আপনাদের সাথে নিয়েই, পাশে নিয়েই। ছাতা মার্কার কাফেলার সারথি শুধু এই প্যানেলের ৩৭ জন সদস্য নন, এখানে যুক্ত আছেন আপনারা সবাই। আপনাদের প্রধান প্রধান সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে, তা সমাধানের জন্য আমরা নির্বাচনী ইশতেহারে প্রকাশ করেছি। শুধু এই ইশতেহারে স্থান পাওয়া সমস্যাগুলোর সমাধান নয়, আফতাবনগরবাসীর যেকোনো ধরনের সমস্যা সমাধানে আমরা কাজ করব ইনশাল্লাহ। আপনাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়ন করার জন্য আমি এবং আমার প্যানেলের প্রতিটা সদস্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই সভাপতি প্রার্থী বলেন, ২০২০ সালে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে করোনা মহামারিসহ নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে আমাকে চড়াই-উৎরাই পার হতে হয়েছে। সে সময় আমার পথ মসৃণ ছিল না। তারপরেও আমি থেমে থাকিনি। মসজিদ-মন্দিরের উন্নয়ন অনুদান, রাস্তাঘাট সংস্করণ, সড়ক বাতি স্থাপন, পয়োনিষ্কাশন, তহবিল বৃদ্ধিসহ নানান উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। এগুলো আজ নতুন করে বলার কিছু নেই।
মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন ঢালী বলেন, জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটিতে অনেকেই নির্বাচন না চেয়ে সিলেকশন কমিটি চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের নির্বাচন পদ্ধতিতেই অবিচল আস্থা ছিল। যে কারণে আমরা মহামান্য হাইকোর্টের কাছে ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন চেয়ে আবেদন করেছিলাম। হাইকোর্ট আদেশনামা জারির ফলে আগামী ২৫ নভেম্বর জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। একটি পক্ষ নিজেদের স্বার্থে নির্বাচন বানচাল করার পাঁয়তারা করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখানে নির্বাচনের পরিবেশ এবং আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের পরিবেশ তৈরি করতে পেরেছি। আর এটি জহুরুল হক স্মৃতি সোসাইটির প্রথম নির্বাচন, যেখানে আপনারা একতাবদ্ধ হয়েছেন। যে কারণে আমিসহ আমার প্যানেল আপনাদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি যে আমরা আপনাদের সেবা করে যাব। আপনাদের মহামূল্যবান ভোট আমাদের দিলে আমরা যদি নির্বাচিত হই তাহলে এই আফতাবনগরের তথা আপনাদের সেবা করতে পারব।
এদিকে এরইমধ্যে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে শেষ সময়ের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা। এখানে মোট ভোটার ১ হাজার ৬৮ জন।
নির্বাচনে মোট তিনটি প্যানেল থেকে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে দুটি প্যানেল পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী দিয়েছে, আর একটি প্যানেল শুধু সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে তাদের প্রার্থী দিয়েছে। সব মিলিয়ে আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমে জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটিতে মোট ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত হবে।
নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন হাবিব মো. হালিমুজ্জামান। রয়েছেন দুইজন নির্বাচন কমিশনার। তারা হলেন- তোফায়েল আহমেদ এবং নূরুল ইসলাম তালুকদার। তিনটি প্যানেলের মধ্যে ছাতা প্রতীকে আলমগীর ঢালী-এস এম কামাল পরিষদে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদের জন্য ৩৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। অন্যদিকে বাইসাইকেল প্রতীকে ইঞ্জিনিয়ার কামাল-মেজবাহ পরিষদেও সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে ৩৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। পাশাপাশি মই প্রতীক নিয়ে শুধু সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছে ডক্টর ইউনুস-নুরুল পরিষদ।
কার্যনিবার্হী পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী যারা
জহুরুল ইসলাম সিটি সোসাইটি নির্বাচনে মোট তিনটি প্যানেলে প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যার মধ্যে থেকে সব মিলিয়ে ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত হবে।
এর মধ্যে ছাতা প্রতীক নিয়ে আলমগীর ঢালী-এস এম কামাল পরিষদে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে আছেন আলমগীর হোসেন ঢালী এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এস এম কামাল। এই পরিষদে আটটি সহ-সভাপতি পদে প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন— কে এম আমিনুল হক ফারুক, গাজী আলাউদ্দিন আলম, আবু সুফিয়ান, মিজানুর রহমান, আবুল হাসিম ভূইয়া, আলমগীর হোসেন, মুক্তার হোসেন মৃধা এবং শ্যামল রঞ্জন সাহা (বাপ্পী)। দুই জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে আছেন মোল্লা জুলফিকার আলী, দেলোয়ার হোসেন।

সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী এম এ এলাহী শিমুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জাহাঙ্গীর আলম, অর্থ সম্পাদক পদে মোহাম্মাদ মাসুম বিল্লাহ, সহ-অর্থ সম্পাদক পদে সৈয়দ ইফতেখার আলী (মনা), দপ্তর সম্পাদক পদে জসিম উদ্দিন, আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে লোকমান হাকিম খন্দকার, সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক পদে এস এম শামীম হোসেন, শিক্ষা ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে আতিকুর রহমান, সহ-শিক্ষা ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে শেখ মাহমুদ উজ্জ্বল, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ আকবর হোসেন, সহ-সমাজ কল্যাণ সম্পাদক পদে আব্দুল হাকিম (লাল)।
পরিবেশ ও নিরাপত্তা সম্পাদক পদে মোহাম্মদ বেলাল হোসেন, প্রচার সম্পাদক পদে মোতাসিম বিল্লাহ সিজন, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা ও শিশুবিষয়ক সম্পাদক পদে কাজী আব্দুল বারেক, সহ-মহিলা ও শিশুবিষয়ক সম্পাদক পদে মোসলেম আলী হাওলাদার বাবু, রাস্তা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ সম্পাদক পদে ডা. মো. শামীম খান, সহ-রাস্তা মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ সম্পাদক পদে কাইয়ুম তালুকদার (কানন), গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানিবিষয়ক সম্পাদক পদে আবু তাহের কোরেশী এবং ধর্মবিষয়ক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন হাজি মো. নরুল ইসলাম।
এ ছাড়া পাঁচজন কার্যনির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আব্দুস সালাম, নজরুল ইসলাম পাটোয়ারী, কামাল উদ্দিন পাঠান, নাইয়ুম বিল্লাহ এবং সোহেল গাজী।
এএসএস/এনএফ