হাসপাতালের সড়কে নীরব প্রতিবাদ, ‘এ হামলার দায় কার?’

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন লড়ছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি। গতরাতে ঢাকা মেডিকেল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে আনা হলে তার সহযোদ্ধারাও ছুঁটে আসেন এই হাসপাতালের সামনে। গতরাতে বিষাদের ছায়া নিয়েই শোককে তার সহযোদ্ধারা রূপান্তরিত করেছেন নীরব ও শিল্পসম্মত প্রতিবাদে।
বাইরে অপেক্ষমাণ তার কর্মী-সমর্থকর, সহযোদ্ধারা ক্ষোভ ও বেদনা নিয়ে হাতে তুলে নিলেন রংতুলি। হাসপাতালের সামনের রাজপথেই যেন রচিত হলো এক ভিন্নধর্মী প্রতিবাদ, সেখানে লেখা হলো- ‘এ হামলার দায় কার?’, ‘বন্ধ হোক নোংরা রাজনীতি’, ‘মার্তৃভূমি অথবা মৃত্যু’, ‘গোলামী না আজাদী?’
এই রংতুলির প্রতিবাদ ছিল এক নীরব প্রতিবাদ। কোনো ভাঙচুর নেই, নেই কোনো উগ্র স্লোগান। কিন্তু পথের ওপর লেখা প্রতিটি শব্দ যেন বর্তমান প্রেক্ষাপটে এক একটি তীক্ষ্ণ প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছে। সহযোদ্ধারা বলছেন, এই হামলা শুধু একজন প্রার্থীর ওপর নয়, এটি সুস্থ রাজনীতির স্বপ্নের ওপর আঘাত।
হাসপাতালের সামনের রাস্তায় রংতুলিতে এসব প্রতিবাদী লেখাগুলো এখনও দৃশ্যমান, অনেকে এখানে ছবি তুলছেন, পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। বলছেন, এটাই তাদের নীরব প্রতিবাদ, নিজেদের কন্ঠস্বর।

তার অনুসারীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, তাদের নিরব প্রতিবাদ, নিজেদের কথাগুলো ফুটিয়ে তোলা হয়েছে হাসপাতালের সামনের রাস্তায়।
তারা বলেন, ঢাকা-৮ আসনে দীর্ঘদিন ধরে হাদি পরিচিত ছিলেন তার বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর এবং সরাসরি গণসংযোগের ধরণে। তিনি বিলাসবহুল গাড়িতে নয়, বরং কখনও পায়ে হেঁটে, কখনও সাধারণ ভ্যান বা রিকশায় চড়ে, আবার কখনও মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেই ভোটারদের কাছে ভোট চাইতেন। তার এই মাঠমুখী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার কৌশল স্থানীয়দের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছিল।
তার অনুসারীরা বলেন, তিনি কেবল প্রতিশ্রুতি নয়, পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে এসেছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল- মানুষের মন জয়ের মাধ্যমে এই আসন থেকে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে গুণগত পরিবর্তন আনা। কিন্তু গতকাল, সেই স্বপ্নযাত্রায় নেমে আসে এক কালিমালিপ্ত প্রহর। দুষ্কৃতকারীদের ছোড়া গুলিতে রক্তাক্ত হন শরিফ ওসমান হাদি। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। যে নেতা গতকালও ভোটের মাঠে লড়েছেন, আজ তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে- মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। আমরা এর বিচার চাই, ন্যায় বিচার চাই।
এএসএস/এমএসএ