তাজরীন ট্রাজেডি : জড়িতদের বিচার দাবি শ্রমিক ফ্রন্টের

তাজরীন ট্রাজেডির ১১ বছর পূর্ণ হলেও জড়িতদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। পাশাপাশি আই.এল.ও কনভেনশন ১২১ এর আলোকে শ্রম আইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) জুরাইন কবরস্থানে নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনকালে সংগঠনের নেতারা এ দাবি জানান।
এসময় সংগঠনের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেকুজ্জামান লিপন, নির্বাহী সদস্য আফজাল হোসেন, ঢাকা নগর সহ-সভাপতি মনির হোসেন মলি, সহ-সভাপতি খালেকুজ্জামান লিপন, সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।
নেতারা অভিযোগ করেন, তাজরীন ফ্যাশনের মালিক অতি মুনাফালিপ্সা থেকে কারখানা আইন বা অগ্নিনিরাপত্তা আইন না মেনে কারখানা পরিচালনা করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। ১১২ জন শ্রমিককে হত্যার জন্য তাজরীনের মালিক দেলোয়ারকে কোনো শাস্তি দেওয়া হয়নি বরং ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নেতৃত্ব দেওয়া হয়েছে।
তাজরীন ফ্যাশনের মালিক দেলোয়ারসহ হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিহত শ্রমিকদের পরিবার এবং আহত শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য আজীবন আয়ের মানদণ্ডে ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানান তারা।
শ্রমিক ফ্রন্টের নেতারা বলেন, কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক হত্যার জন্য শাস্তি না পাওয়া এবং নামমাত্র কিছু টাকা অনুদান দিয়ে পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ অব্যাহত রাখায় বাংলাদেশে কর্মপরিবেশের উন্নতি হচ্ছে না। জীবিকার জন্য কাজ করতে এসে জীবনহানির মিছিল থামছে না। শ্রমিকরাও মানুষ এবং তাদের জীবনের মূল্য রয়েছে এ বোধ শিল্প মালিকদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে না। তাই তাজরীনের ঘটনার পরেও ট্যাম্পাকো, বি. এম. কন্টেইনার কিংবা সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে শ্রমিককে প্রাণ দিতে হলো। ক্রেতাদের চাপে পোশাক শিল্পের ভবন নিরাপত্তা ব্যবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও শ্রমিকের জীবনের উন্নতি হচ্ছে না। কর্মক্ষেত্রে আগুনে পুড়ে বা ভবনের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুর আশঙ্কা কিছু কারখানায় কমলেও শ্রমিকের সার্বিক নিরাপত্তাহীনতার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
নেতারা আরো বলেন, কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় মৃত্যু শুধু শ্রমিকের জীবনহানি ঘটায় না, তার ওপর নির্ভরশীল পুরো পরিবারকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ঠেলে দেয়। কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তাহীনতা দীর্ঘমেয়াদে সামাজিক ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। তাই কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে বাধ্য করার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং অর্থদণ্ডের নজির তৈরি করতে হবে। সে লক্ষ্যে শ্রম আইনের ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত ১৫১ নং ধারা আই.এল.ও কনভেনশন ১২১ এর আলোকে পরিবর্তন করতে হবে। শ্রমিকরা দীর্ঘদিন যাবত এ সংশোধনের দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু শ্রম আইনের সর্বশেষ সংশোধনীতেও শ্রমিকদের সেই দাবি পূরণ হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তারা।
ওএফএ/পিএইচ