রোজার আগে নিত্যপণ্যের বাজারে উপচেপড়া ভিড়
দরজায় কড়া নাড়ছে রমজান। সেইসঙ্গে শুরু হচ্ছে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে করোনা রোধে কঠোর বিধিনিষেধ। এ অবস্থায় মহল্লার ছোট মুদি দোকান থেকে শুরু করে পাইকারি দোকান ও সুপার শপে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। ক্রেতাদের বেশিরভাগই নিত্যপণ্যের তালিকা হাতে নিয়ে এসেছেন। তাদের তালিকায় তালিকায় আজ ছোলা, মুড়ি, খেজুর, ডাল, চিনি ইত্যাদি বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে। অন্যদিকে সকাল থেকেই ক্রেতার চাপ বেশি থাকায় বিক্রেতাদের ঠিকমতো দম ফেলার ফুরসত নেই।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর নিউমার্কেট কাঁচা বাজার, আজিমপুর কাঁচা বাজার, হাতিরপুল বাজার ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ ক্রেতাই রমজান উপলক্ষে বাজার করছেন।
নুরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা বলেন, কাল থেকে রোজা। আবার ‘লকডাউন’ও শুরু হচ্ছে। রোজা রেখে বাজার করতে কষ্ট হবে, তাই আগেভাগেই প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য কিনে নিচ্ছি।
সিরাজুল ইসলাম নামের আরেক ক্রেতা বলেন, রোজা উপলক্ষে বাজার করছি। নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মনে হচ্ছে। কোনো কারণ ছাড়াই চিনির দাম বাড়ছে। আসলে সাধারণ মানুষের কষ্ট কেউ বোঝে না।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, সাদা চিনি ৬৪ টাকা, লাল চিনি ৭০ টাকা, মসুর ডাল ৯৮ টাকা, মুগ ডাল ১২৭ টাকা, বুটের ডাল ৭৮ টাকা, খেসারির ডাল ৮০ টাকা, এংকর ডাল ৪৮ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা, মটর ডাল ৯০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৮-৬৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭০ টাকা, পাইজাম চাল ৫৩ টাকা, সয়াবিন ১৩০ টাকা, আলু ২০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা, দেশি আদা ১২০ টাকা, ভারতীয় আদা ১৬০ টাকা, রসুন ১২০ টাকা, শুকনা মরিচ ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ডিপ্লোমা গুড়া দুধ ৬৫০ টাকা, ফার্মফ্রেশ গুড়া দুধ ৬০০ টাকা, মার্কস গুড়া দুধ ৫৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের দাম অতিরিক্ত রাখা হচ্ছে বলে ক্রেতাদের অভিযোগ থাকলেও বিক্রেতারা বলছেন, রোজা বা ‘লকডাউন’কে ঘিরে কোনো পণ্যের দাম বাড়ানো হয়নি। আগে যে দামে বিক্রি হতো সে দামেই এখনও বিক্রি হচ্ছে।
নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের শাহী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আলী আজহার বলেন, রমজান এবং ‘লকডাউন’কে ঘিরে কোনো পণ্যের দাম বাড়েনি। কোনো পণ্যের ঘাটতিও নেই। আগের স্বাভাবিক দামেই সব কিছু বিক্রি হচ্ছে।
নিউমার্কেটের হোসেন স্টোরের বিক্রয়কর্মী আরিফ হোসেন বলেন, চিনির দাম কিছুটা বেড়েছে। বাকি সব পণ্যই আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। এই মুহূর্তে চিনি, ছোলা, বেসন, আটা-ময়দা, নানা ধরনের ডাল, গ্লুকোজ, রুহ আফজাসহ শরবতের বিভিন্ন ট্যাং বেশি বিক্রি হচ্ছে।
নিত্যপণ্য ছাড়া ইফতারের উপকরণ- মুড়ি ও খেজুরের বাজারেও ক্রেতাদের বেশ উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কাঁঠাল বাগান বাজারের খেজুর বিক্রেতা সালেহীন সরকার বলেন, সারাবছর খেজুরের তেমন চাহিদা না থাকলেও রোজা এলে মানুষ বিভিন্ন ধরনের খেজুর চায়। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী আমরা বিভিন্ন ধরনের খেজুর মজুদ করি। এবছর মরিয়ম খেজুর বেশি চলছে। করোনার কারণে বাজারে খেজুরের চালান কম। তাই দাম একটু বেশি।
তবে মুড়ির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নিউমার্কেটের মুড়ি বিক্রেতা শফিকুল বলেন, আগেও পাইকারি বাজারে মুড়ি ৭০ টাকা কেজি এবং খুচরা বাজারে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো। এখনও সেই দামে বিক্রি হচ্ছে। মুড়ির পাশাপাশি চিড়া এবং আখের গুড়ের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এছাড়া জিরা ৩৯০ টাকা, দারুচিনি ৩৮০ টাকা, লবঙ্গ ৮৫০ টাকা, কালো মরিচ ৬২০ টাকা, সাদা মরিচ ৮৫০ টাকা, কালোজিরা ৩৬০ টাকা, সরিষা ৯৫ টাকা, কিসমিস ২১০ টাকা, কাজুবাদাম ৬১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরএইচটি/এসএসএইচ