বাঁচার জন্য জানালার কাঁচ ভেঙে চিৎকার করছিলেন বাসিন্দারা

এটিএম বুথের দরজা খুলে ভেতরে রেস্ট নিচ্ছিলাম। হঠাৎ আগুন দেখে ভবনটির সামনে গিয়ে দেখি, সারা ভবনে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ভবনে থাকা লোকজন তখন বাঁচার জন্য জানালার কাঁচ ভেঙে চিৎকার করছিলেন। ভবনের নিচের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে একজনকে উদ্ধার করি। কিন্তু আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় আর উপরে উঠতে না পেরে ভবনের নিচে নেমে আসি।
রাজধানীর আরমানিটোলায় আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানসনে আগুন লাগার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বজলুর রহমান ঢাকা পোস্টকে এসব কথা বলেন। তিনি হাজী মুসা ম্যানসনের পাশে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম বুথের সিকিউরিটি গার্ড।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ১৮ মিনিটে ভবনটিতে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট এখনও কাজ করছে।
বজলুর রহমান বলেন, ৩টা ১৫ মিনিটে এটিএম বুথের দরজা খুলে আমি ভেতরে রেস্ট নিচ্ছিলাম। সোজাসোজি হাজী মুসা ম্যানসনটি দেখা যাচ্ছিল। পরে হঠাৎ করে ৩টা ১৮ মিনিটের দিকে ভবনটিতে আলোর ঝলকানি দেখতে পাই এবং সঙ্গে বিকট শব্দ হয়। দৌড়ে ভবনটির সামনে যাই। তখন ছোট ছোট আগুন ছিল। কিন্তু আগুন দ্রুত ভবনে ছড়িয়ে পড়ছিল।
তখন রাস্তায় থাকা একজনকে নিয়ে ভবনটির নিচ তলার গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করি। ভেতরে প্রবেশ করতেই একজনকে নিচে আহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। তখন আমি ও আমার সঙ্গে থাকা লোকটি তাকে উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে আসি। তারপর আমরা দুজন দোতলায় যাই। কিন্তু দোতলায় গিয়ে দেখি আগুন বেড়ে যাচ্ছে। ফলে আমরা দ্রুত বের হয়ে আসি। আগুনের পরিমাণ আরও বাড়তে থাকে।
তিনি বলেন, তখন নিচ থেকে উপরে তাকিয়ে দেখি ভবন থেকে নারী-পরুষ আগুন থেকে বাঁচার জন্য চিৎকার করছেন। তারা বিভিন্নভাবে জানালার কাঁচ ভেঙে লাফ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আগুন লাগার ঠিক ১০ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে আসে। তারা এসে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও ভবনের ভেতরে প্রচুর ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়। এই ধোঁয়া থেকে বাঁচতে ভেতরের লোকজন তখনও চিৎকার করছিল। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন প্রথমে ভবনের গ্রিল কেটে প্রথমে শিশু ও নারীদের এবং পরে পুরুষদের উদ্ধার করে নিচে নামিয়ে আনে।
অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজন নিহত হয়েছেন এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন। আগুন লাগা হাজী মুসা ম্যানশনের দোতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত ১৫-১৮টি পরিবার বাস করে।
• এই প্রতিবেদনের পরবর্তী আপডেট : ১৯ ইউনিটের চেষ্টায় কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে, নিহত ২
এমএসি/এআর/আরএইচ