বাজেটে প্রতিবন্ধী ভাতা পাঁচ হাজার টাকা করাসহ ১১ দাবি
আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে জাতীয় বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা মাসিক ন্যূনতম ৫০০০ টাকা করাসহ ১১ দফা দাবি জানিয়েছে সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজ।
রোববার (৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বি-স্ক্যানের সাধারণ সদস্য জহিরুল ইসলাম বলেন, ২০০৫ সাল থেকে ২০০ টাকার ভাতা ২০২৪ সালে ৮৫০ টাকা হয়েছে। গত ১৯ বছরে ভাতা বেড়েছে মাত্র ৬৫০ টাকা। তাহলে পাঁচ হাজার টাকা ভাতা বৃদ্ধিতে কত বছর লাগবে? দেশের সিংহভাগ প্রতিবন্ধী মানুষ যেখানে বেকার বা স্বল্পমজুরিতে কর্মরত এবং অনেকেই পরিবারের ওপর নির্ভরশীল সেখানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা তাদের জীবনের একটি বড় অবলম্বন। আমরা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা ৫০০০ টাকা দাবি জানাচ্ছি, সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির কোটা পুনঃপ্রবর্তনসহ ১১ দফা দাবি পূরণের জন্য আহ্বান জানাই।
এ সময় তিনি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতার একটি তুলনামূলক চিত্রও তুলে ধরে বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা শ্রীলঙ্কায় ৫০০০ টাকা, নেপালে প্রতিবন্ধিতার মাত্রার ভিত্তিতে প্রায় ২২০০ টাকা থেকে প্রায় ৪০০০ টাকা পর্যন্ত, ভারতের দিল্লিতে ২৫০০ রুপি, পাকিস্তানে ২০০০ রুপি ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে।
সংগঠনের নেতারা জানান, সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী সপ্তাহে জেলায় জেলায় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারক লিপি প্রদান এবং ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সরাসরি স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে ১১ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। তাদের দাবিগুলো হলো—
২০২৪-২৫ জাতীয় বাজেটেই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা মাসিক ন্যূনতম ৫০০০ টাকা এবং শিক্ষা উপবৃত্তি মাসিক ২০০০ টাকা করা। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ভাতা ও উপবৃত্তি উভয়ই বরাদ্দ করতে হবে,অবিলম্বে প্রতিবন্ধী মানুষের সরকারি চাকরিতে নিয়োগে বিশেষ নীতিমালা (কোটা) প্রণয়ন করতে হবে, চলতি বাজেটেই বাংলাদেশ ব্যাংকে এক হাজার কোটি টাকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উদ্যোক্তা তহবিল গঠন করতে হবে, অনতিবিলম্বে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদপ্তরকে কার্যকর করতে হবে, বাংলা ইশারা ভাষা ইন্সটিটিউট প্রণয়ন এবং দেশের ৬৪ জেলার সাধারণ বিদ্যালয়ে বাংলা ইশারা ভাষাযুক্ত সমন্বিত শিক্ষাকার্যক্রম চালু ও আদালতসহ সকল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে বাংলা ইশারা ভাষার দোভাষী সেবা নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষা ও চাকরির নিয়োগ অভিন্ন জাতীয় শ্রুতিলেখক নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে, নিরন্ন, শ্রমজীবী-মেহনতি এবং অটিস্টিকসহ সব গুরুতর প্রতিবন্ধী মানুষদের আত্মনির্ভরশীল করতে আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ সব পুনর্বাসন কর্মসূচিতে ৬ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা করতে হবে, অটিস্টিক, বুদ্ধিসহ গুরুতর প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য স্বাস্থ্য ও কেয়ারগিভার ভাতা চালু করতে হবে, প্রবেশগম্য অবকাঠামো এবং গণপরিবহন নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ করতে হবে, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জাতীয় সংসদ, স্থানীয় থেকে জাতীয়, সব পর্যায়ে প্রতিবন্ধী মানুষের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে এবং মন্ত্রণালয়ভিত্তিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংবেদনশীল বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।
সংক্ষুব্ধ প্রতিবন্ধী নাগরিক সমাজের সংগঠক সালমা মাহবুবের পরিচালনায় এ সময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সদস্য সচিব ইফতেখার মাহমুদ প্রমুখ।
ওএফএ/এমএ