গ্রামীণ রাস্তার পাশে পুকুর খনন নয়

গ্রামীণ রাস্তার পাশে পুকুর খননে সতর্ক করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। কেউ এর ব্যত্যয় ঘটালে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিভাগীয় কমিশনারদেশকে নির্দেশ দিয়েছে বিভাগ।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। পরিপত্রে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের বিভিন্ন উপজেলায় এলজিইডি'র নির্মিত সড়কের পাশে পুকুর ও নালা খনন করা হচ্ছে। সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর, কূপ, মাটি বা সেচ নালা ইত্যাদি খনন করলে সড়কের পার্শ্ব-ঢাল এবং আড়-ঢাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব ক্ষেত্রে সড়ক সীমানার বাইরে ন্যূনতম দূরত্ব বজায় রেখে ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন সম্পর্কিত কার্যক্রম হাতে নেওয়া যায়।
পরিপত্রে বলা হয়, নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে গ্রামীণ সড়কের ধার ঘেঁষে পুকুর, সেচ নালা খনন করা দেশের প্রচলিত আইন অনুসারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কোনো ব্যক্তি রাস্তার ধার ঘেঁষে পুকুর বা খাল বা কূপ অথবা সেচনালা তৈরি করলে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে নিজ খরচে সুরক্ষা ঢাল নির্মাণ করবেন।
বিল্ডিং কন্সট্রাকশন আইনের ৩ নং ধারা অনুসারে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো পুকুর খনন বা পুনঃখনন করা যাবে না উল্লেখ করে পরিপত্রে বলা হয়, যদি কেউ এমনভাবে পুকুর বা সেচনালা খনন করেন, যার ফলে ভূমি বা সড়কের বা পথের ব্যবহারের ক্ষেত্রে কোনো অসুবিধার সৃষ্টি করে তাহলে কর্তৃপক্ষ এ আইনের ৩ ধারার (৩) উপধারা অনুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে তা অপসারণ, খনন বা পুনঃখনন, বন্ধ বা ভরাট করার আদেশ দিতে পারেন।
এতে বলা হয়, যদি কেউ ৩ নং ধারার বিধান লঙ্ঘন করেন বা কর্তৃপক্ষের আদেশ পালনে ব্যর্থ হন তাহলে এ আইনের ১২ ধারা অনুযায়ী আদালত দোষী ব্যক্তিকে ২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন। এছাড়া ইমারত নির্মাণ বিধিমালার ২৮ নং বিধি অনুযায়ী, নিজ ভূমির কমপক্ষে ১০ ফুট ভেতরে পুকুর বা জলাশয় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। অর্থাৎ সরকারি রাস্তার সীমানার কিনারা থেকে কমপক্ষে ১০ ফুট দূরত্বে এবং ৪৫ ডিগ্রি ঢালে পাড় রেখে পুকুর বা জলাশয় খনন করতে হবে।
পরিপত্রে বলা হয়, দণ্ডবিধি ১ হাজার ৮৬০ এর ধারা ৪৩১ মোতাবেক, সরকারি রাস্তার ক্ষতিসাধন ফৌজদারি দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইনে ৫ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানা বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। সরকারি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ভূমি ও ইমারত (দখল পুনরুদ্ধার) অধ্যাদেশ ১৯৭০-এর ধারা-৫ অনুয়ায়ী অবৈধভাবে দখল হওয়া ভূমির ওপর নালা বা পুকুর খনন বা পুনঃখনন করলে জেলা প্রশাসক ওই নালা বা পুকুর ৩০ দিনের মধ্যে অপসারণের আদেশ দিতে পারেন।
জনস্বার্থের গুরুত্ব বিবেচনায় জেলা প্রশাসক ক্ষেত্র বিশেষে ৭ দিনের মধ্যেও অপসারণের আদেশ দিতে পারেন উল্লেখ করে এতে বলা হয়, অবৈধ দখলের জন্য ৭ ধারা অনুযায়ী আদালত দোষী ব্যক্তিকে কারাদণ্ড বা জরিমানা অথবা উভয় ধরনের দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারেন। এ অবস্থায় গ্রামীণ সড়কের পাশে প্রচলিত আইন ও বিধি-বিধানের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কোনো পুকুর, কূপ, আঁটি বা সেচ নালা খনন করা হলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় কমিশনারদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
এসএইচআর/জেডএস