মাদরাসা অধ্যক্ষসহ ২ জনের যাবজ্জীবন

চট্টগ্রামে শিশুকে যৌন নিপীড়নের মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুলান-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা পৃথক রায়ে এ আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন।
দণ্ডিতরা হলেন- মাকসুদুর রহমান ও জোবায়ের হোসেন। মাকসুদুর রহমান নগরীর পতেঙ্গা এলাকার জামিয়াতুল মদিনা মাদরাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার দেওঘর এলাকার বাসিন্দা। আর জোবায়েরের বাড়ি নোয়াখালীর চরজব্বর থানার পূর্ব চরভাটা এলাকায়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর পতেঙ্গা এলাকায় পাঁচ বছর বয়সী ভিকটিম শিশু তার বড় ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির সামনে মোবাইলে গেম খেলছিল। পরে মাকসুদ ওই শিশুকে তার বড় ভাইয়ের সামনে থেকে ডেকে মাদরাসায় নিয়ে যান।
এরপর মাদরাসায় তার নিজ রুমে নিয়ে ওই শিশুকে যৌন নিপীড়ন করেন। এ ঘটনায় ভিকটিম শিশুর বাবা আসামি মাকসুদের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
আরও পড়ুন
আসামি মাকসুদ ওই এলাকার জামিয়াতুল মদিনা মাদরাসার অধ্যক্ষ ছিলেন। ভিকটিম শিশু ওই মাদরাসার শিক্ষার্থী।
পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৭ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০২২ সালের ২ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মাদরাসার আরেক শিক্ষককে খালাস দিয়েছেন আদালত।
অন্যদিকে, ২০১৯ সালের ৬ জুলাই নগরীর পাঁচলাইশ থানার পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায় ১৩ বছর বয়সী এক শিশুকে যৌন নিপীড়ন করেন আসামি জুবায়ের। তারা দুজনই ওই এলাকার একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। এ ঘটনায় ওই শিশুর মা পাঁচলাইশ থানায় জুবায়েরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলে ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। পরে সাতজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত পৃথক রায়ে আসামি মাকসুদ ও জোবায়েরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে আদালত দুই আসামির প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
রায়ের সময় আসামি মাকসুদ উপস্থিত ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানামূলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে আসামি জোবায়ের আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরএমএন/এমএন