২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন না চালানোর হুঁশিয়ারি

মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক প্রদানসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতিতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রেলওয়ের রানিং স্টাফরা।
২৭ জানুয়ারির মধ্যে দাবি মানার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন তারা। এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে ২৮ জানুয়ারি থেকে রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরের বটতলী পুরোনো রেলস্টেশনে সংবাদ সম্মেলনে কর্মবিরতি কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সৃষ্ট এ পরিস্থিতির জন্য রেল মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভূমিকাকে দায়ী করেছেন সংগঠন দুটির নেতারা।
রেলওয়ের রানিং স্টাফ বলতে ট্রেনের চালক, সহকারী চালক, গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকদের (টিটিই) বোঝানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল বারী, সহসভাপতি খুরশিদ আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর এ বি এম শফিকুল আলম প্রমুখ।
এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও রানিং স্টাফ ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মো. মজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ১৬০ বছর ধরে মাইলেজ সুবিধা পাচ্ছিলেন রানিং স্টাফরা। অর্থাৎ দৈনিক আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে বেসিকের (মূল বেতন) হিসেবে বাড়তি অর্থ পেতেন। এ ছাড়া অবসরের পর বেসিকের সঙ্গে এর ৭৫ শতাংশ অর্থ যোগ করে অবসরকালীন অর্থের হিসাব হতো। তবে ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর এই সুবিধা সীমিত করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে সমস্যার সৃষ্টি হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা ১৬০ বছর ধরে অবসরের পর মাইলেজের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পেয়ে আসছেন। রাজনৈতিক ও প্রাকৃতিক- যেকোনো দুর্যোগকালীন পরিস্থিতিতে ট্রেন সচল রাখেন রানিং স্টাফরা। তাদের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি বা জাতীয় দিবসের বন্ধ নেই। কিন্তু গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্থ মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর রেলওয়ের রানিং স্টাফদের বেতন, পেনশন ও আনুতোষিক কমিয়ে দেওয়া হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় রানিং স্টাফদের প্রাপ্যতার পক্ষে থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয় জটিলতা সৃষ্টি করছে।
২০২২ সালের পর নিয়োগপত্রে দুটি শর্ত আরোপের কথা উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মীরা চলন্ত ট্রেনে দায়িত্ব পালনের জন্য রানিং অ্যালাউন্স ছাড়া অন্য কোনো ভাতা পাবেন না এবং মাসিক রানিং অ্যালাউন্সের পরিমাণ মূল বেতনের চেয়ে বেশি হবে না। এ ছাড়া অবসরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের ভিত্তিতে পেনশন ও আনুতোষিক পাবেন। অথচ এটা রেলওয়ের কোনো আইন বা বিধিবিধানে উল্লেখ নেই।
রানিং স্টাফ নেতারা বলেন, বিদ্যমান সমস্যার তারা স্থায়ী সমাধান চান। অর্থ মন্ত্রণালয়ের পত্র এবং নতুন নিয়োগ পাওয়া রানিং স্টাফদের বৈষম্যমূলক শর্ত প্রত্যাহার না করলে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করা হবে।
তারা আরও বলেন, নতুন সরকারের কাছে এটা নতুন দাবি- এমনটি নয়। এর আগেও আন্দোলন করেছেন তারা। ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল কর্মবিরতি পালন করলে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন। এরপর বারবার আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দিলেও সংকটের কোনো সমাধান এখন পর্যন্ত করা হয়নি। বর্তমান সরকারকে তিনবার সময় দেওয়ার পরও তারা বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে।
আরএমএন/এমএন