শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনায় এমজেএফের নিন্দা

দেশের বিভিন্ন স্থানে সম্প্রতি শিশু ও নারী ধর্ষণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ দাবি করেছে সংস্থাটি।
রোববার (৯ মার্চ) এক বিবৃতিতে ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের জরুরি পদক্ষেপ দাবি করেছে।
নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে এমজেএফের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেছেন, আমাদের বিচার ও সুরক্ষা ব্যবস্থা নারী ও শিশুদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।
আরও পড়ুন
তিনি বলেন, ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের দ্বারা মেয়ে ও শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতা, যাকে ‘ইনসেস্ট’ বলা হয়, তা একটি গুরুতর সমস্যা যা সমাজে উপেক্ষা করা হয়। বেশিরভাগ ভুক্তভোগী সামাজিক লজ্জা ও তথাকথিত পারিবারিক মর্যাদার কারণে মুখ খুলতে পারে না। কিন্তু আমরা যদি এ বিষয়ে আওয়াজ না তুলি, তাহলে অপরাধীরা নীরবতার সুযোগ নিয়ে বারবার এমন ঘৃণ্য অপরাধ চালিয়ে যাবে।
শাহীন আনাম সমাজকে এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে এবং নারী ও মেয়েদের জন্য একটি নিরাপদ ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জাতীয় শিশু কমিশন গঠনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে। এই কমিশনকে অবশ্যই অপরাধীদের ন্যায়বিচারের আওতায় আনতে, তদন্ত প্রক্রিয়া আরও কার্যকর করতে এবং শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে কাজ করতে হবে। এমজেএফের মতে, শিশুরা বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে, অথচ কর্তৃপক্ষ তাদের দুর্দশার প্রতি উদাসীন।
এমজেএফ দীর্ঘদিন ধরে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা মোকাবিলায় সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপের জন্য প্রচারণা চালিয়ে আসছে। এমজেএফের দাবিগুলো হলো:
১. শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং এর কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
২. আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর জবাবদিহিতা বাড়ানো যাতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ও সিদ্ধান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
৩. একটি দক্ষ ও স্বচ্ছ বিচারিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা যাতে ধর্ষকদের বিলম্ব ছাড়াই বিচারের আওতায় আনা যায়।
৪. অভিভাবকদের তাদের শিশুদের যৌন সহিংসতা থেকে রক্ষা করার উপায় সম্পর্কে সচেতন করতে ধারাবাহিক প্রচারণা ও শিক্ষা চালানো।
২০২৫ সালের আন্তর্জাতিক নারী দিবসে যখন ‘বিশ্ব সমস্ত নারী ও মেয়েদের জন্য: অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন’ থিম নিয়ে উদযাপন করছে, তখন বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি লজ্জাজনক এবং এটিকে জরুরি ভিত্তিতে মোকাবিলা করতে হবে। এমজেএফ নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশকারী শিক্ষার্থী, নারী ও পুরুষদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে। আমরা সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, সুশীল সমাজ এবং নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাই—একটি সমাজ গড়ে তুলতে একসাথে দাঁড়ান যেখানে নারী ও শিশুরা ভয়মুক্তভাবে বাঁচতে পারে।
এমএসআই/এআইএস