সিভিল সার্জনের নামে টাকা আদায়ের অভিযোগ কর্মচারীর বিরুদ্ধে

সিভিল সার্জনের নাম ভাঙিয়ে বদলি বাতিলের নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য সহকারী মো. ফজলুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। তিনি চট্টগ্রাম জেলার স্বাস্থ্য সহকারী অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন স্বাস্থ্য সহকারী সুরেশ চন্দ্র দাশ।
এ ছাড়া কর্মক্ষেত্রে যথাযথভাবে উপস্থিত না থাকা ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সহকর্মীকে হুমকি দেওয়াসহ নানা অভিযোগে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়। গত ২৪ এপ্রিল ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ারকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটি গঠন করা হয়।
স্বাস্থ্য সহকারী সুরেশ চন্দ্র দাশ লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তাকে সীতাকুণ্ড থেকে ফটিকছড়িতে বদলি করা হলে তিনি পরিবার-পরিজনের কথা বিবেচনায় বদলি বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। এই সুযোগে মো. ফজলুল হক নিজেকে প্রভাবশালী হিসেবে দাবি করে বদলি আদেশ বাতিল করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তার কাছ থেকে চার দফায় বিকাশের মাধ্যমে ৪৫ হাজার টাকা নেন। একইভাবে সীতাকুণ্ডের আরেক স্বাস্থ্য সহকারী কাজী মো. আরিফ উদ্দিনের কাছ থেকেও ৬০ হাজার টাকা আদায় করেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বদলি আদেশ বাতিল করতে পারেননি এবং টাকা ফেরতও দেননি।
আরও পড়ুন
সুরেশ চন্দ্র দাশ বলেন, মো. ফজলুল হক চৌধুরী একসময় নিজেকে ড. হাছান মাহমুদের ঘনিষ্ঠ নেতা পরিচয় দিতেন। সেই পরিচয়ে সহকর্মীদের শাসাতেন। এখন আবার নিজেকে বিএনপির লোক পরিচয় দিয়ে সবাইকে ভয় দেখাচ্ছেন। তিনি নিয়মিত অফিসে অনুপস্থিত থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। হাজিরা খাতায় লাল কালিতে অনুপস্থিত লেখা থাকলেও প্রশাসন নির্বিকার।
অভিযোগ রয়েছে, মো. ফজলুল হক চৌধুরী শুধু বদলি নয়, নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রেও আর্থিক লেনদেনে জড়িত। অনেক স্বাস্থ্য সহকারী একইভাবে তার কাছে প্রতারিত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা এখনো কাজ শুরু করতে পারিনি। শিগগিরই তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, স্বাস্থ্য সহকারী ফজলুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে স্বাস্থ্য সহকারী মো. ফজলুল হক চৌধুরীর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হয়। তবে প্রথমে তিনি কল রিসিভ করেন না। পরে রিসিভ করলেও প্রতিবেদকের পরিচয় পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।
এমআর/এএমকে