কুষ্টিয়ায় নারীকে নির্যাতন : জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় মহিলা পরিষদ

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানাধীন শিলাইদহ ইউনিয়ন এলাকায় মাংস চুরির অভিযোগে এক নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন ও মাথার চুল কেটে দেওয়া এবং বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সচেতন করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি।
বুধবার (১১ জুন) মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আজ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানাধীন এলাকায় মাংস চুরির অভিযোগে এক নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন ও মাথার চুল কেটে দেওয়া এবং বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ৯ জুন বিকেলে চুরির অভিযোগে প্রতিবেশী রিপন আলীর স্ত্রী ওই নারীকে বাড়ির পেয়ারা গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন। পরে ওই নারীর স্বামী তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। একই দিন রাতে স্থানীয় কিছু লোক ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে ভাঙচুর করে এবং তাকে প্রতিবেশীর বাড়িতে তুলে নিয়ে যান। এ সময় তারা ওই নারীকে মারধর করে তার মাথার চুল কেটে দেন।
পুনরায় রাত ১০টায় স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহ আলমের নেতৃত্বে এ বিষয়ে সালিশ হয় এবং নির্যাতনের শিকার নারীর দুটি গরু, একটি ছাগল ও স্বর্ণালংকার নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আরও জানা যায়, এই ঘটনার কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ওই নারীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
বর্তমানে বেআইনি সালিশ ও ফতোয়ার মাধ্যমে নারীকে শাস্তি প্রদান ও জরিমানার ঘটনায় মহিলা পরিষদ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। এ ধরনের ঘটনা নারীর স্বাভাবিক জীবন-যাপন ও অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বেআইনি সালিশের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত শাস্তি প্রদান নিষিদ্ধ করে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগের রায় বাস্তবায়নে আশু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে।
আরও পড়ুন
মহিলা পরিষদ এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তিরোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সচেতন করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অনুরোধ জানাচ্ছে। একইসঙ্গে নারীর প্রতি সব প্রকার অপতৎপরতা ও সহিংসতা প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।
জেইউ/এমএন