জাতীয় বার্নে ঢাবি ছাত্রদের ইন্টার্নশিপে ‘সম্মতি’, পরিচালকের ব্যাখ্যা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ইন্টার্নশিপের সুযোগ ‘আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত’ হয়েছে— এমন তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হলেও প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল ও ফেসবুক পেইজে ‘বার্ন ইনস্টিটিউটে ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাবেন ঢাবির ৪ বিভাগের শিক্ষার্থীরা’—শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদে বলা হয়, “ঢাবির স্বাস্থ্য অর্থনীতি, ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি এবং পাবলিক হেলথ (মাস্টার্স) বিভাগের শিক্ষার্থীরা এখন থেকে জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন।”
সংবাদে ইনস্টিটিউট পরিচালক অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের কাজ শেখার সুযোগ দেওয়া হবে এবং প্রয়োজনে সহায়তা করা হবে।
তার এ বক্তব্যকে আনুষ্ঠানিক সম্মতি হিসেবে ব্যাখ্যা করে সামাজিক মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়। তবে প্রকৃতপক্ষে এমন কোনো আনুষ্ঠানিক সম্মতি এখনো দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ডা. নাসির উদ্দিন।
পরিচালকের সাফ ব্যাখ্যা : ‘প্রস্তাবই আসেনি’
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, ইন্টার্নশিপের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো সম্মতি দেওয়া হয়নি, এমনকি এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও আমাদের হাতে আসেনি। একজন শিক্ষার্থী এসেছিল, তাকে আমি বলেছি— প্রোপার চ্যানেল অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ থেকে প্রস্তাব এলে আমরা একাডেমিক কাউন্সিলে বসে সিদ্ধান্ত নেব।
তিনি আরও বলেন, শুধু মুখোমুখি আলোচনার ভিত্তিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে এমন সম্মতি দেওয়া যায় না। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি চিঠি পাঠায়, তখন বিষয়টি রিভিউ করে একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।
শিক্ষার্থী নেতার পোস্ট ঘিরে বিভ্রান্তি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার যুগ্ম সদস্য সচিব শাহরিয়ার মোহাম্মদ ইয়ামিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করেন, ইন্টার্নশিপ ম্যানেজড! স্বাস্থ্য অর্থনীতি, ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি ও পাবলিক হেলথ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এখন থেকে বার্ন ইনস্টিটিউটে ইন্টার্নশিপ করতে পারবেন। পরিচালক মহোদয় সম্মতি দিয়েছেন।
এই পোস্ট ভাইরাল হলে বিভিন্ন ফেসবুক পেইজ ও পোর্টাল তা নিউজ হিসেবে পরিবেশন করে। এতে বিভ্রান্ত হন শিক্ষার্থীরা। অনেকেই বার্ন ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন ইন্টার্নশিপের বিষয় জানতে।
‘রাজি করানো’ আর ‘সম্মতি পাওয়া’ এক নয় : ইয়ামিন
এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে শাহরিয়ার মোহাম্মদ ইয়ামিন বলেন, আমি কেবল প্রস্তাব দিয়েছি, উনাকে রাজি করিয়েছি। আনুষ্ঠানিক কিছু হয়নি। আমি বলেছি যে আমি কথা বলেছি, উনি আগ্রহ দেখিয়েছেন। এরপর বিভাগগুলো আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠাবে।
তিনি স্বীকার করেন, বার্ন ইনস্টিটিউটের সঙ্গে এখনো কোনো লিখিত সমঝোতা বা অনুমোদন হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এ ধরনের সংবেদনশীল ইস্যুতে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো অত্যন্ত দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার ও প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি উভয়ের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ।
এসএআর/এমজে