সরকারি সড়ক দখল করে স্থাপনা নির্মাণ, সাবেক ডিআইজির বিরুদ্ধে অভিযোগ

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) মালিকানাধীন সরকারি সড়ক দখল করে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, আবাসিক এলাকার বি ব্লকের ৩ নম্বর রোডের (বাই লেন) মাঝের অংশে প্রায় ১ হাজার ১০০ বর্গফুট সরকারি সড়ক দখল করে স্থাপনা তোলেন পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) নুরুল আলম।
রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই সড়কটি দখল হয়ে যাওয়ার কারণে ওই এলাকায় ড্রেনেজব্যবস্থা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ফলে বর্ষা ও অতি জোয়ারে ড্রেনের পানি সড়কে উপচে উঠে হাঁটাচলায় ভোগান্তিতে পড়ছেন স্থানীয়রা।
সম্প্রতি আবাসিকের বাসিন্দা সাহাব উদ্দিন সিডিএর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, বি ব্লকের ৩ নম্বর রোডের (বাই লেন) দুই প্লটের মাঝের সরকারি সড়ক– যার দৈর্ঘ্য ৫০ ফুট ও প্রস্থ ২২ ফুট; অবৈধভাবে দখল করে একটি বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, বিষয়টি অতীতে বহুবার সিডিএকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং দখলকারী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা প্রভাব খাটিয়ে সিডিএর কর্মকর্তাদের হয়রানি করেছেন এবং এক প্রকৌশলীকে অপদস্থ করে বদলিও করিয়েছেন।
সরেজমিন দেখা যায়, চান্দগাঁও আবাসিকের বি ব্লকের মূল সড়ক থেকে বামে ৩ নম্বর রোডে প্রবেশ করলে শেষ প্রান্তে দখলকৃত অংশটির অবস্থান। ৩ নম্বর রোডের শেষ থেকে শুরু হয়ে ২ নম্বর রোডের দিকে যাওয়া নালার পাশে গিয়ে এটি মিলেছে। সড়কের এক পাশে নুরুল আলমের একতলা ভবন, আর ভবনের পাশ ঘেঁষেই সরকারি সড়ক দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে বাণিজ্যিক স্থাপনা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নুর আলম আওয়ামী লীগের আমলে প্রভাবশালী কর্মকর্তা ছিলেন। ভবনটি নির্মাণের সময় অভিযোগ দিলে চান্দগাঁও থানা পুলিশকে দিয়ে নানাভাবে হয়রানি করান তিনি। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জায়গা দখল করে রাখলেও কেউ তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাননি।
ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, দেখতে কী রকম লাগে! সড়কের ওপর সরাসরি স্থাপনা। কোনো বিবেকসম্পন্ন মানুষ এমন কাজ করতে পারেন না। সড়ক দখলের কারণে ড্রেন পুরোপুরি আটকে গেছে। বর্ষায় হাঁটুসমান পানি হয়ে যায়। আমরা বিষয়টি নিয়ে বললে নানা চাপ আসে। সরকারি সড়ক দখল হয়ে গেলে এলাকাবাসীর তো চলাচলই বিপন্ন হয়ে পড়বে। সিডিএ আগে ব্যবস্থা নিলে আজ এই সমস্যায় পড়তে হতো না।
এ বিষয়ে সাবেক ডিআইজি নুরুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটি রাস্তার একেবারে শেষের অংশ। পেছনে নালা। ওই দিক থেকে বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা থাকে। এ জন্য আমি সিডিএতে আবেদন করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় স্থাপনা তৈরি করেছি। এখন সিডিএর একজন ইন্সপেক্টর টাকার বিনিময়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছেন। তাকে আমি সব কাগজপত্র পাঠিয়েছি। এখন আমার ভবন যদি বেআইনি প্রক্রিয়ায় নির্মাণ করা হয়, সেটি নিয়ে উনি ব্যবস্থা নিন।
সিডিএর অথরাইজড অফিসার কাজী কাদের নেওয়াজ বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। সড়কটি সিডিএর মালিকানাধীন সরকারি সম্পত্তি। সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমআর/বিআরইউ