ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে হলে অর্থায়ন করতে হবে : জাফরুল্লাহ

ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে চিঠি দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
তিনি বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই চিঠি মিষ্টি কথা ছাড়া আর কিছুই না। প্রকৃতঅর্থে যদি ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়াতে চান, তাহলে আপনাকে তাদের অর্থায়ন করতে হবে। ফিলিস্তিনিদের সামরিক অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করতে হবে।’
শনিবার (২২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ফিলিস্তিনিদের সংগ্রাম ও স্বাধীনতার প্রতি প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে আয়োজিত এক সংহতি সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আপনি যদি ইতিহাসের অন্তর্ভুক্ত হতে চান, তবে সবচেয়ে কঠিন যে কাজটি করতে হবে তা হলো কূটনৈতিক তৎপরতা। কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হলে আমাদের ছোটখাটো সব ভুল-ভ্রান্তি ভুলে যেতে হবে। পাকিস্তানিরা আমাদের ওপর যে অন্যায় করেছিল তার জন্য তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে তাদেরসহ তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া সবাইকে নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাতে হবে। আর আমাদের এখান থেকে ১০ হাজার সামরিক জনবল ফিলিস্তিনিতে পাঠাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের একইভাবে কাশ্মীরিদের পক্ষে আন্দোলন করতে হবে। সমর্থন দিতে হবে ভারতের মাওবাদীদেরও। তা না হলে বঙ্গবন্ধুকে অপমান করা হবে। বঙ্গবন্ধুর সংবিধানে বলা আছে, পৃথিবীর যেখানেই আত্মরক্ষার সংগ্রাম চলবে সেখানেই আমরা তাদের পাশে থেকে সাহায্য করব।’
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চেয়েছিল বলে উল্লেখ করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের জেনারেল ওসমানী ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ তাদেরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, যে রাষ্ট্র মানবিক ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে অত্যাচার চালায়, তাদের সাহায্য আমাদের প্রয়োজন নেই।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সত্তর বছর ধরে একটা জাতি লড়াই করছে। আমরা তাদের এই লড়াইয়ের প্রতি সংহতি জানাই। আজ ক্ষমতাসীনরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। তারা আবার দেশের বিক্ষোভকারীদেরও গ্রেফতার করছে। এটা সব ফ্যাসিবাদীদের একই চরিত্রের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। আমরা আজ যে সংহতি জানাচ্ছি, তা সব দেশের মজলুম মানুষের প্রতি এবং যে প্রতিবাদ এটা সকল জালিমের বিরুদ্ধে।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ফিলিস্তিনের নিপীড়িত মানুষের প্রতি এই সংহতি জানাতে পেরে ভালো লাগছে। সেইসঙ্গে আমাদের নিজেদের দেশের প্রতিও নজর দিতে হবে। সরকার একইসাথে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কথা বললেও অন্য দিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক সৃষ্টির জন্য পাসপোর্ট থেকে একসেপ্ট ইসরায়েল (ইসরায়েল ব্যতীত) শব্দ যুগল তুলে দিয়েছে। তারা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে আগামী নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে একচ্ছত্রভাবে ক্ষমতায় আসার পথ পরিষ্কার করতে চায়। আজ আমাদেরকেও যেন ফিলিস্তিনের মতো ভোগান্তিতে পড়তে না হয় এবং কোনো সাম্রাজ্যবাদীর কবলে পড়তে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সভায় বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম (বীর প্রতীক) ছাড়াও আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচএন/এফআর