দ্বন্দ্বের কারণে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠীর ফিরে আসার পথ সুগম হবে : মঞ্জু

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতনের পর রাজনীতির মাঠে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে থাকা দলগুলো এখন পারস্পরিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে। এই দ্বন্দ্বে একদিকে আছে বিএনপি, আরেকদিকে জামায়াত। তাদের এই দ্বন্দ্বের কারণে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী ফিরে আসার পথ সুগম হবে। এ বিষয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখছি কিছু কিছু নেতা তাদের বক্তব্যে রাজনৈতিক শালীনতা বা শিষ্টাচারেরও সীমা অতিক্রম করছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ও ক্ষমতার রাজনীতিকে কেন্দ্র করে এই কাদা-ছোড়াছুঁড়ি বাড়ছে।
‘নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির বিপরীতে একটি নির্বাচনী জোট বা সমঝোতার প্রচেষ্টা চলছে। এমন একটি পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগবিরোধী আন্দোলন বা যুগপৎ আন্দোলনে থাকা অন্য দলগুলো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। তাদের কেউ কেউ ভেতরে ভেতরে দুই শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছে বলে জানা গেছে।’
আরও পড়ুন
মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, দলমতের পার্থক্য থাকলেও ফ্যাসিবাদের প্রশ্নে সবাইকে এক হওয়ার আহ্বান জানাই। আওয়ামী লীগকেও রিকনসিলেশন করা যায় তবে তার আগে তাদেরকে ভুল স্বীকার করতে হবে, জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। গণহত্যা, গুম, খুন, লুটপাট এবং দেশ ও জাতিকে ধ্বংস করার পরও যারা গলা উঁচু করে কথা বলে তাদের কপালে দুঃখ ছাড়া আর কিছু নেই।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের কবলে পড়েছিল ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি, চ্যানেল ওয়ান ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকা। নির্যাতন আর নিষ্পেষণের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়েছিল সাংবাদিক সমাজ। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও আমাকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সদস্য ফরম পূরণ করার পর সদস্য হতে দেয়নি ফ্যাসিবাদের দোসর সাংবাদিকরা। তারা পুরাতন অনেক সাংবাদিককেও সদস্য করেনি। দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদেরকে শেল্টার দিত এই দলকানা সাংবাদিকেরা। সাধারণ জনতাকে গুলি করতে উৎসাহ দিত এই সাংবাদিকেরা। আমাদের ভুলের কারণে যাতে ফ্যাসিবাদের উত্থান না হয় সেই ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, যাত্রাবাড়ী ও ভান্ডারিয়ায় জুলাইয়ের আন্দোলনে একটা মরলে আরেকটা আগাইয়া আসে। কীভাবে আন্দোলন ধমানো যাবে বলে আক্ষেপ করেছে সেই ফ্যাসিবাদী পুলিশ। যাদের আমরা কখনো নাম শুনেনি সেই সারজিস, নাহিদ ও হাসনাতরাই আমাদের নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। দলগুলো ১৫/১৭ বছর আন্দোলন করে সফল হয়নি। সেই সব রাজনৈতিক দলকে মনে রাখতে হবে। ঐক্য ও সংহতির ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই বলে মন্তব্য করেন মজিবুর রহমান মঞ্জু।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির সদস্য সচিব মো. জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন এবি পাটির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম মহানগরের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক ও ভাইস চেয়ারম্যান লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম।
এমআর/এসএসএইচ