জুলাই পরবর্তী আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে না পারলে রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ নেই

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করার পর দেশের মানুষের মধ্যে যে বিশাল পরিবর্তন, প্রত্যাশা ও আশা-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে, এটাকে যদি আমরা ধারণ করতে না পারি, তাহলে কোনো রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলের ভবিষ্যৎ নেই।
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স ইউনিটি ও বাংলাদেশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে বিএনপি যদি সরকার গঠন করতে পারে, ওই ধারণাগুলো (জিয়াউর রহমান যেভাবে দেশ চালিয়েছিলেন) আবার ফেরত নিয়ে আসব। সেটার ভিত্তিতে আমরা এখন সব কাজ করছি। আগামী দিনের স্বাস্থ্য খাত কেমন হবে, শিক্ষা খাত কেমন হবে, কর্মসংস্থানের জন্য কী হবে, পরিবেশের জন্য কী হবে, মহিলা ও শিশুদের জন্য কী হবে... সেই ফাউন্ডেশনের ওপর আমরা আবার আগামীর বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের কাজ প্রায় সমাপ্তির দিকে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি নাগরিককে দেশের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও দেশের পরিবর্তনের সাথে অংশীদার হতে হবে এবং এটার বেনিফিট তার কাছে যেতে হবে। বিএনপির এখন যতগুলো কর্মকাণ্ড চলছে বিভিন্ন জায়গায়, আমরা কিন্তু একটা প্রশ্নোত্তর পর্ব রাখছি। অর্থাৎ রাজনীতিবিদদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য এটা করা হচ্ছে।
আমীর খসরু বলেন, যেই গণতন্ত্রের কথা বলছি, সেটাকে সফল করতে হলে যদি জবাবদিহিতা আনতে না পারি, যদি রাজনীতিবিদরা প্রশ্নের সম্মুখীন না হয়, তাহলে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। এরপরে রাজনীতিতে সহনশীলতা থাকতে হবে। অপরের সাথে আপনি দ্বিমত পোষণ করেও, তার মতকে সম্মান জানাতে হবে। এই সংস্কৃতি যদি আমরা আনতে না পারি, তাহলে শত সংস্কার করেও কোনো পরিবর্তন হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চলছে, আমাদের নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যে ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে, বিএনপি কিন্তু প্রত্যুত্তরে সেই ভাষায় যাচ্ছে না। আমরা (বিএনপি) কিন্তু এগুলো গ্রহণ করছি, হজম করছি। তবে আমরা আমাদের ভাষায় কথা বলছি, আমরা রাজনীতির ভাষায় কথা বলছি। আমরা গণতন্ত্রের ভাষায় কথা বলছি। এটা আমাদেরকে ধারণ করতে হবে এবং এটাই হবে আগামী দিনের বাংলাদেশের রাজনীতি।
তিনি আরও বলেন, আমরা কিন্তু বড় পিকচার দেখছি। ছোটখাটো বিষয়ে আমরা দেখছি না। আর বড় পিকচারটা হচ্ছে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষ। বাংলাদেশের মানুষের ভবিষ্যৎ হচ্ছে সবচেয়ে বড় পিকচার। সেদিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। এত বাধা-বিপত্তি আসা সত্ত্বেও আমরা কিন্তু সবাই নির্বাচনের দিকে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছি। সেদিকে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
বিএনপির এ নেতা বলেন, আমরা বলেছি বিএনপি ক্ষমতায় আসলে স্বাস্থ্য খাতে বিনামূল্যে প্রত্যেক নাগরিককে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হবে। শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরা বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছি। সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে আমরা কারিগরি শিক্ষাটা স্কুল থেকেই শুরু করতে যাচ্ছি। আমরা এক কোটি কর্মসংস্থানের ওয়াদা করেছি আঠারো মাসে। আমরা কিন্তু আত্মকর্মসংস্থানের ওপরও জোর দিচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়নের কথা আমরা বলছি, এটা কিন্তু কেউ কোনোদিন বলেনি। রাজনীতিকে গণতন্ত্রের কথা সবাই বলে। কিন্তু অর্থনীতিকে গণতন্ত্রায়ন করে এটার বেনিফিট মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া, প্রত্যেকটি মানুষ অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়া... যে নতুন অর্থনৈতিক মডেল আমরা চিন্তা করছি, এটা শুধু রাজনীতি নয়, অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা পালন করবে।
ওএফএ/এমজে