ধানের শীষ-নৌকা-লাঙ্গল থাকবে না, দুনিয়া ও আখেরাতে ‘মিজান’ থাকবে

প্রথম আলো নয়, ক্ষমতা দেওয়ার মালিক আল্লাহ বলে মন্তব্য করেছেন সম্প্রতি আলোচিত টক-শো ব্যক্তিত্ব, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এএসএম শাহরিয়ার কবির।
তিনি বলেন, ক্ষমতার মালিক মালিকুল মুলক্। যদি মনে করেন ক্ষমতা যাবে জামায়াতে ইসলামীর হাতে, তাহলে অবশ্যই ক্ষমতায় যাবে জামায়াত।
তিনি বলেন, পৃথিবী কেন, আসমান জমিনে কারও শক্তি নেই– আমাদের এই ‘মিজান’ আটকিয়ে রাখতে। হাশরের ময়দানে এই মিজান (দাঁড়িপাল্লা) থাকবে। ধানের শীষ থাকবে না, নৌকাও থাকবে না, লাঙ্গলও থাকবে না, আমরা এমন একটা প্রতীক নিয়ে কাজ করি যেটা দুনিয়াতেও থাকবে, আখেরাতেও থাকবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মানবাধিকার বিভাগের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলের মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনার তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সেমিনারে আমন্ত্রিত অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) হলরুমে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র শিবিরের সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন– সাবেক সেনাকর্মকর্তা ও গুম ভুক্তভোগী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুল্লাহিল আমান আযমী। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন– আহত, পঙ্গুত্ব বরণকারী এবং শহীদ পরিবারের সদস্যরা।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলের মানবাধিকার লঙ্ঘনজনিত ঘটনার তথ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সেমিনারে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এএসএম শাহরিয়ার কবির বলেন, আল্লাহ এমন কোনো ভার আমার উপর দেবেন না, যে ভার বহন করতে পারবো না। যারা বলেন জামায়াতে ইসলামীর জনপ্রিয়তা কমে যাচ্ছে। আবার জনপ্রিয়তা নিভে যাচ্ছে। প্রথম আলো দেখতেছেন, কি করল? জামায়াতের জনপ্রিয়তা ঠিক রেখে ১৩০০ জনের উপর একটা সার্ভে করে বলে দিল, জামায়াত ২৬ শতাংশ আর বিএনপি ৬৩ শতাংশ পাবেন। উনারা ৬৩ কেন, ৮৩ বললেও ফয়সালা প্রথম আলোর হাতে না, ক্ষমতা কে পাবেন, সে ফায়সালা আল্লাহর হাতে।
অনেকে আমাকে টকশোতে কেন খুব জোরে জোরে, চিল্লায়া কথা বলি, রাগ করে কথা বলি। ১৭ বছর মিথ্যা শুনতে শুনতে কান দুইটা ধাপা পড়ে গেছে। যাদের কান খোলা ছিল তারা ছিলেন আয়না ঘরে। ধাপা পড়া লোক হলে জোরে কথা বললে তার কানের মধ্যে সেটা প্রবেশ করানো খুব কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য আল্লাহ কাছে সবসময় দোয়া করি আমার কণ্ঠকে ইসলামের জন্য এমন করে দাও, যেন কান পর্যন্ত আমার কথা পৌঁছায়, কান ভেদ করে যেন দিল পর্যন্ত পৌছায়।
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ, মুসলিম লীগের ভোট বলে কিছু নেই উল্লেখ করে ব্যারিস্টার এএসএম শাহরিয়ার কবির বলেন, ভোটের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। আমরা বিশ্বাস করি, সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক আল্লাহ তায়ালা। আর যিনি যাকে ইচ্ছা তাকে ক্ষমতা দেন।
শেখ হাসিনার পালানোর ঘটনা বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমরা কি ২০২৪ সালে জানতাম শেখ হাসিনা এইভাবে পালায়া যাবে? অথচ গত ১৫ বছর জামায়াত-বিএনপি সবাই আন্দোলন করছি, একটা বালির ট্রাক পর্যন্ত সরাতে পারেনি। আর আল্লাহর ইচ্ছায় এমন মাঠ তৈরি করে দিলেন– যে পৃথিবীর ইতিহাসে সব সংসদ সদস্য, মন্ত্রী, মসজিদের খতিব পর্যন্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। তাহলে আল্লাহ কী করতে পারে, তার উদাহরণ এটাই।
এই দেশে ইসলামী শাসন ব্যবস্থা কায়েমের জন্য আর কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদি কেউ বিকল্প না পান তাহলে আপনাকে এটাকে গ্রহণ করতে হবে। যারা আমাদের সমালোচনা করেন তাদের কাছেও আমার আহ্বান। ভাই বিকল্প থাকলে আপনি তৈরি করে ইসলাম কায়েম করেন। যদি না মনে হয় জামায়াতে ইসলামী ভালো। তাহলে জামায়াতে ভোট দান করেন। কারণ আপনার উপর এটা ফরজে কেফায়া, ইসলাম কায়েম করা।
শিবিরের বিরুদ্ধে বট বাহিনী বলে সমালোচনার বিরুদ্ধে সমালোচনা করে তিনি বলেন, বট বাহিনী শিবিরে। শিবির খালি গালিগালাজ করে। এটা খুব পরিষ্কার করে খালেদ মহিউদ্দিনকে বলে দিচ্ছি। আমাকে মেরে ফেলে দেয়ার জন্য ৩০ লাখ পুরস্কার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এটা কিন্তু খালেদ মহিউদ্দিনরা বলে না। টকশোতে বলেছিলাম ইসলামের নাম শুনলে আপনাদের মধ্যে চুলকায়, আর খুব খেপে গিয়েছে। চুলকায় শব্দটা এভাবে বলা উচিত হয়নি। ইসলাম সম্পর্কে একটা অ্যালার্জি আছে বলবো। কেন অ্যালার্জি, ইসলাম হলে দুর্নীতি করতে পারবেন না। অন্যের হক নষ্ট করতে পারবেন না।
তিনি বলেন, ১৯৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত ইসলাম ছিল না বলেই বাংলাদেশের কোনো সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়েরা স্কুল কলেজে যেতে পারেনি। আর ইসলাম প্রতিষ্ঠা হলে একটা মেয়ে রাত ১২টা হোক ১টা হোক যখন যাবে, আমাদের কোনো বোনের দিকে কেউ ফিরেও তাকাবে না। এই ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হোক, ইন্ডিয়া তা চায় না।
জেইউ/বিআরইউ