ক্যাম্পাসকে প্রতিবাদশূন্য করতে চায় চবি প্রশাসন

জোর করে আদায় করার অভিযোগের ভিত্তিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) তিন ছাত্রনেতাকে প্রশাসনের কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠানোর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। সংগঠনটি বলছে, এ ঘটনার মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে প্রতিবাদশূন্য করতে চায় চবি প্রশাসন।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয় ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রাগীব নাঈমের পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন হল না খুলে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে বিপাকে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ ১৮ মাস বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় দ্রুত পরীক্ষায় বসার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের সুযোগে পরিবহন এবং আবাসনের দাবি না তোলার শর্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দিক থেকে আসা অত্যন্ত দুঃখজনক। শাটল ট্রেন বন্ধ থাকায় সেটি পুনরায় চালু করা কিংবা অন্তত শহর থেকে আসা-যাওয়া করা শিক্ষার্থীদের জন্য বাসের ব্যবস্থা করার যৌক্তিক দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীদের নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদটুকুও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সহ্য করতে পারল না। শিক্ষার্থীরা বিপদে পড়লে সব শর্ত ও বাধার দেওয়াল ডিঙিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরসহ অন্যান্য শিক্ষকরা এগিয়ে আসবেন, এমনটাই তো হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে ঘটল তার উল্টো। একজন শিক্ষার্থীকে শর্তের বেড়াজালে আটকে যৌক্তিক দাবি আদায়ের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আসার ‘উৎসাহ প্রদান ও প্ররোচনার’ বানোয়াট গল্প সাজিয়ে বাধ্য করা হলো তিন ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে। সম্প্রতি সেই বানোয়াট অভিযোগের ভিত্তিতে তিন ছাত্রনেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠাতেও কুণ্ঠাবোধ করল না প্রশাসন।
এতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি মুক্তচিন্তা ও গণতন্ত্র চর্চার পীঠস্থান হওয়ার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রশাসনও আজ ভিন্নমত দমনে তৎপর। সারাদেশ আর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোর রাজনৈতিক চিত্রে ভিন্নতা অবশিষ্ট নেই আর। পরিতাপের বিষয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকরাও এখন প্রশাসনের উঁচু চেয়ারে বসে নিজেদের শিক্ষক পরিচয় ছাপিয়ে দলদাসে পরিণত হচ্ছেন, ভিন্নমত দমনের সরকারি মিশনের আস্থাভাজন কাপ্তান হয়ে উঠছেন। রাজেশ্বর দাশ গুপ্ত, শাহ মোহাম্মদ শিহাব ও আশরাফি নিতুকে শাস্তি দেওয়ার পাঁয়তারা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে প্রতিবাদশূন্য করার মিশনের অংশ বলেই আমরা মনে করি।
বিবৃতিতে হুঁশিয়ার করে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে লিপ্ত বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাদের বিরুদ্ধে বানোয়াট অভিযোগের ভিত্তিতে কোনোরূপ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার দুঃসাহস দেখালে শিক্ষার্থীরা চুপ করে থাকবে না। আমরা আশা করব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভিন্নমত দমনের পথ থেকে সরে শিক্ষার্থীদের সংকট নিরসনে এগিয়ে আসবে। অন্যথায় যথাসময়ে আন্দোলনের মাধ্যমে এসব অপতৎপরতার যথোপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।
এমএইচএন/এসএসএইচ