বিশ্ব পর্তুগিজ ভাষা দিবস ৫ মে

আজ ৫ মে বিশ্ব পর্তুগিজ ভাষা দিবস। ২০০৯ সালে কমিউনিটি অব পর্তুগিজ স্পিকিং কান্ট্রিজ (সিপিএলপি) এবং ২০১৯ সালে ইউনেসকো এ দিনটিকে পর্তুগিজ ভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।
দিবসটিকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর পর্তুগিজ ভাষায় কথা বলা নয়টি দেশের (মাতৃভাষা) জোট- সিপিএলপি নানা আয়োজনের মাধ্যমে এই দিবসটি উদযাপন করে। এমনকি একেক বছর একেক দেশে এর অনুষ্ঠান উদযাপন হয়। এ বছর পর্তুগিজ ভাষা ও সংস্কৃতির অধিবেশনটি সাও টোমে এবং প্রিন্সিপেতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধসহ উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
এই দিনটি মূলত সিপিএলপি প্রথম সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রীদের বৈঠক (২০০৫) উপলক্ষ্যে নির্বাচিত হয় এবং এর মধ্য দিয়ে পর্তুগিজ ভাষা ও লুসোফোন সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করতে নানা সাংস্কৃতিক, সাহিত্য, সংগীত ও আলোচনামূলক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বর্তমানে প্রায় ২৬৭ মিলিয়ন মানুষের মাতৃভাষা বা দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে পর্তুগিজ ব্যবহৃত হচ্ছে, যা এটিকে বিশ্বের পঞ্চম সর্বাধিক মাতৃভাষী ভাষা করে তোলে।
পর্তুগিজ বিশ্বের নয়টি দেশে সরকারি ভাষা (পর্তুগাল, অ্যাঙ্গোলা, ব্রাজিল, কেপ ভার্দে, গিনি-বিসাউ, গিনি-ইকুয়েটোরিয়াল, মোজাম্বিক, সাও টোমে ও প্রিন্সিপে, তিমুর-লেস্টে) ও চীনের ম্যাকাও স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে অফিসিয়াল স্ট্যাটাস পেয়েছে।
একজন পর্তুগিজ নাগরিক ম্যানুয়েল আফোনসো জানান, এই দিবসটি সাধারণ জীবনে এমন কোনো প্রভাব ফেলে না বা আমরা এটি সাধারণভাবে উদযাপন করি না। তবে, আন্তঃদেশীয় সংস্কৃতি ও ভাষাগত সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের মাঝেই সীমাবদ্ধ।
বাংলা ভাষার মাঝেও পর্তুগিজ ভাষার প্রভাব রয়েছে বাংলা ভাষায় অসংখ্য পর্তুগিজ শব্দ দেখা যায়। যেমন- জানালা, বারান্দা, চাবি, বালতি, গামলা, সাবান প্রভৃতি সরাসরি পর্তুগিজ থেকে আগত। তাছাড়া প্রথম বাংলা ব্যাকরণের রচয়িতা একজন পর্তুগিজ নাগরিক যার নাম ম্যানুয়াল আসামসাও।
বাংলা ভাষায় প্রতি আধিপত্য ঐতিহাসিকভাবে মুঘল-বিড়ম্বনার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ঔপনিবেশিক যুগের সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়া প্রদর্শন করে। এছাড়া এর ঐতিহাসিক প্রভাব বাংলা শব্দভাণ্ডার ও সাংস্কৃতিক জীবনে স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়, যা দুই ভাষার মধ্যে একটি সমৃদ্ধ মৈত্রী-সম্পর্কের সাক্ষ্য বহন করে।
বিশ্ব পর্তুগিজ ভাষা দিবস শুধু একটি দিবস নয়, এটি ভাষাগত বৈচিত্র্য ও সাংস্কৃতিক সংহতির প্রতীক।
এমএ