মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২১তম আসরে বাংলাদেশ

বিশ্বের বৃহত্তম হালাল শোকেস হিসেবে পরিচিত মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস-এর ২১তম আসরে অংশগ্রহণ করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো বাংলাদেশ-এর উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় এবং বাংলাদেশ হাইকমিশন কুয়ালালামপুরের সমন্বয়ে মালয়েশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন সেন্টারে গত ১৭ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। চার দিনব্যাপী আয়োজিত এই মেলায় বাংলাদেশের ৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অংশগ্রহণ করেছে।
খাদ্য ও পানীয়, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ওষুধ, গৃহস্থালি ও ব্যক্তিগত যত্ন, প্রসাধন সামগ্রী এবং তৈরি পোশাক এসব ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ থেকে গ্লোবাল ক্যাপসুলস লিমিটেড, গোল্ডেন প্লাস ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, এপেক্স কনভিনিয়েন্স ফুডস লিমিটেড, কে. এম. আর ক্রাফ্ট, রিমার্ক এইচবি লিমিটেড, নিউজিল্যান্ড ডেইরি প্রোডাক্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, এমএনএল ডিজাইনার জোন, গর্জিয়াস উইথ ট্রেন্ড, নওরিস ফুডস লিমিটেড মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নেটওয়ার্কিং, বিজনেস ম্যাচমেকিংসহ সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মেলার উদ্বোধনী দিনে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন করেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক বেবী রানি কর্মকার ও বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার শাহানারা মনিকা। এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ-এর যুগ্মসচিব মুহাম্মদ রেহান উদ্দিন, মালয়েশিয়া এক্সটারনাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (মেট্রেড) এর সিনিয়র পরিচালক এস. জয়শংকর, ইভেন্ট প্রতিষ্ঠান কিউবি ইন্টিগ্রেটেড মালয়েশিয়ার পরিচালক (বিজনেস ইভেন্টস) ইউনিস লতিফ, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট সাব্বির এ খানসহ চেম্বারের অন্যান্য ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধি, বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রথম সচিব (বাণিজ্যিক) প্রণব কুমার ঘোষসহ হাইকমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও প্রবাসী বাংলাদেশি মিডিয়া প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। পরে অতিথিরা মেলা ও বাংলাদেশি স্টল পরিদর্শন করেন এবং বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে মালয়েশিয়ায় তাদের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে বিভিন্ন পরামর্শ দেন এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের ইপিবি মহাপরিচালক জানান, মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস-এ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর উদ্যোগে বাংলাদেশ তৃতীয় বারের মতো অংশগ্রহণ করছে। বাংলাদেশি পণ্যের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়াসহ আসিয়ান অঞ্চলে বাংলাদেশের পণ্যের বাজার সম্প্রসারণের জন্য রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কাজ করে যাচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি প্রতিষ্ঠান যাতে এই ধরনের মেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে সে বিষয়ে উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানকে তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান এবং ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে হাইকমিশনের বিভিন্ন উদ্যোগ ও পরিকল্পনা নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করার বিষয়টি অবহিত করেন। এছাড়াও তিনি সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফরে মালয়েশিয়ার সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশে হালাল সেক্টরের উন্নয়নসহ যৌথ প্রচেষ্টা/প্রকল্প গ্রহণসহ হালাল করিডোর/হালাল হাব প্রতিষ্ঠার বিষয়ে মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কাছে উপস্থাপিত প্রস্তাবের বিষয়ে উল্লেখ করেন।
মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেস মেলায় খাদ্য ও পানীয়, মডেস্ট ফ্যাশন, খাদ্য প্রযুক্তি ও প্যাকেজিং, ওষুধসামগ্রী, ই-কর্মাস, ইসলামিক ফিন্যান্স ও ফিনটেকসহ মোট ১৪টি ক্লাস্টারে ২৩৮০টি বুথের মাধ্যমে বিশ্বের ৩৯টি দেশের ১০১৯টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করেছে। মালয়েশিয়ার মিনিস্ট্রি অব ইনভেস্টমেন্ট, ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং মালয়েশিয়া এক্সটারনাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (মেট্রেড) এই মেলার আয়োজন করে। এই মেলায় মালয়েশিয়ার হালাল ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন বারাহাদ (এইচডিসি) জিইসি ডিপার্টমেন্ট অব ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট মালয়েশিয়া সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে।
জেডএস