নবীজির কাছে সাহাবি আব্দুল্লাহ ইবনে সালামের শোনা প্রথম ৪ উপদেশ

ইসলাম গ্রহণের আগে একজন ইহুদি পাদরি ছিলেন বিখ্যাত সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।হজরত ইয়াকুব ইবনে ইউসুফ আ.-এর বংশধর ছিলেন তিনি। ইহুদি ধর্মের গ্রন্থ সম্পর্কে ভালোভাবে জানাশোনা ছিল তার। সেখানে বর্ণিত শেষ নবীর আলামত সম্পর্কে জানতেন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করতে এলেন, তখন মদিনার লোকজন দলে দলে রাসূল সা.-কে দেখতে এলেন। তাদের সঙ্গে আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রা.-ও এলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সা.-এর নূরানী চেহারা দেখেই অনুভব করতে পারেন যে, সত্যিই ইনি আল্লাহর প্রেরিত শেষ নবী।
মুহাম্মদ সা.-ই ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত শেষ নবী কি না তা যাচাই করতে তিনি রাসূল সা.-কে কয়েকটি প্রশ্ন করলেন।
রাসূলুল্লাহ সা. তখন উপস্থিত নও-মুসলিমদের মাঝে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। সেদিন রাসূল সা.-এর কথা শুনে কোনো প্রশ্ন না করেই চলে গেলেন হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম রা.।
দ্বিতীয় দিন রাসূলুল্লাহ সা.-এর কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁর সাথে কিছুক্ষণ একান্ত আলোচনাকালে তাঁকে এমন কিছু প্রশ্ন করলেন, যার উত্তর নবী ছাড়া অন্য কারো পক্ষে দেয়া সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন
রাসূল সা. সব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিলেন। উত্তর পেয়ে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসুল। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৩৪৮)
ইসলাম গ্রহণের পর তিনি রাসূল সা.-এর কাছ থেকে প্রথম যে উপদেশ শুনেছিলেন এতে রাসূল সা. সালামের প্রচার-প্রসার, দরিদ্রকে ভালোবাসা এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা ও রাত জেগে ইবাদতের কথা বলেছিলেন।
এ বিষয়ে হাদিসের গ্রন্থ ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে, আবদুল্লাহ বিন সালাম রা. থেকে বর্ণিত—
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন (হিজরত করে মক্কা থেকে) মদীনায় এলেন তখন লোকেরা তাঁর কাছে যেতে লাগলো এবং বলাবলি করতে লাগলো, আল্লাহর রাসূল এসেছেন, আল্লাহর রাসূল এসেছেন, আল্লাহর রাসূল এসেছেন (তিনবার)।
আমিও লোকজনের সাথে (তাঁকে) দেখতে গেলাম। আমি তাঁর চেহারা ভালোভাবে দেখার পর বুঝতে পারলাম যে, এই চেহারা মিথ্যাবাদীর নয়। সর্বপ্রথম তাঁর মুখে আমার শোনা কথা এই যে, তিনি বললেন—
হে লোকসকল! তোমরা সালামের ব্যাপক প্রচলন করো, আহার করাও, আত্নীয়তার সম্পর্ক বহাল রাখো এবং লোকজন যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন রাতের বেলা নামায পড়ো। শান্তিতে জান্নাতে প্রবেশ করো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩২৫১)