বাংলাদেশকে সাফ জেতানো কোচের চিরবিদায়

বাংলাদেশের ফুটবলে কোচ আসে, কোচ যায়। এই আসা-যাওয়ার মিছিলে অস্ট্রিয়ান কোচ জর্জ কোটান একেবারে ভিন্ন। সাফল্য, ব্যক্তিত্ব, আন্তরিকতা সব কিছু মিলিয়ে তিনি বাংলাদেশের ফুটবলে এক বিশেষ স্থানে। সেই কোটান সম্প্রতি পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরের পর থেকেই বাংলাদেশে কোটানের মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশের ফুটবল সংশ্লিষ্ট কেউ কোটানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারলেও হাঙ্গেরি ফুটবল ফেডারেশনের মাধ্যমে অনেকে নিশ্চিত হয়েছেন পাশাপাশি কোটানের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি শোক বার্তা পোস্টকেও ভিত্তি ধরা হচ্ছে।
সেখানে মৃত্যুর দিন উল্লেখ করা হয়েছে ২৫ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশের শীর্ষ ক্লাব ঢাকা আবাহনী তাদের সাবেক কোচের প্রয়াণে ইতোমধ্যে ফেসবুক পেজে শোক জানিয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন অবশ্য এখনো কোনো শোক বার্তা দেয়নি।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সেই চ্যাম্পিয়ন দলের কোচ ছিলেন কোটান। ২০০৩ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে সাফের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি উঁচিয়ে ধরেছিলেন ফাইনালের অধিনায়ক হাসান আল মামুন (নিয়মিত অধিনায়ক রজনীকান্ত বর্মণ ফাইনাল খেলতে পারেননি)। সেই হাসান আল মামুন প্রিয় গুরুর মৃত্যুতে লিখেছেন,‘আপনি শুধু আমার কাছে কোচই নন, একজন পিতা সমতুল্য। বাংলাদেশের ফুটবলে আপনার অবস্থান চির উন্নতই থাকবে সব সময়।’
জাতীয় দলে কয়েক বছর কোচিং করানোর পর বাংলাদেশে ক্লাব কোচিংও করিয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্রের পর সর্বশেষ ঢাকা আবাহনীর কোচ ছিলেন কোটান। বাংলাদেশের সাবেক ফুটবলারদের সঙ্গেও ছিল তার দারুণ সখ্যতা। সময় পেলে বাফুফে ভবনের পাশে সাবেক ফুটবলারদের সংগঠন সোনালী অতীত ক্লাবের উঠানে বৈকালিক ফুটবলে মেতে উঠতেন।
বাংলাদেশের ফুটবলসংশ্লিষ্টদের মধ্যে কোটানের সঙ্গে অনেকটা নিয়মিত যোগাযোগ টিম অ্যাটেনডেন্ট মোঃ মহসিনের। কোটানের মৃত্যুর সংবাদ শুনে অত্যন্ত ব্যথিত মহসিন,‘আমার আজকের মহসিন হওয়ার পেছনে তার অবদান সর্বাধিক। আমাকে তার ছেলের মতোই দেখতেন। ’ মহসিন কোটানের স্ত্রী, সন্তানের সঙ্গে গত কয়েক ঘন্টায় একাধিকবার ফোন করলেও সাড়া পাননি।
মোঃ মহসিন ছিলেন বলবয়। সেই বলবয় মহসিন গত দেড় দশকে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অপরিহার্য অংশ। মহসিনকে জাতীয় দলে টিম অ্যাটেনডেন্টের সুযোগ দিয়েছিলেন কোটানই। বাংলাদেশের অনেক তারকা ফুটবলার, কোচ, সংগঠকের সঙ্গে যোগাযোগ নিয়মিত না থাকলেও মহসিনের সঙ্গে তার ছিল নিয়মিত যোগাযোগ। এখানেই ফুটে উঠে কোটানের আন্তরিকতা ও ব্যক্তিত্ব।
এজেড/এফআই