হান্নান বনাম রাজিন, বন্ধু যখন শত্রু!

আগামী ৩ মার্চ থেকে মাঠে গড়াচ্ছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) নতুন আসর। সে উপলক্ষ্যে গতকাল (শুক্রবার) প্রথম পাঁচ রাউন্ডের জন্য সূচি ঘোষণা করেছিল ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিটন (সিসিডিএম)। আগামী সোমবার ডিপিএলের উদ্বোধনী দিনেই মুখোমুখি হবে দুই বন্ধু হান্নান সরকার ও রাজিন সালেহ’র দল। প্রতিপক্ষ হিসেবে নামার আগে তারা পরস্পরকে শুভকামনা জানিয়েছেন।
ডিপিএল আসরের উদ্বোধনী দিনে ম্যাচ রয়েছে ৬টি দলের। এর মধ্যে আবাহনী লিমিটেড ও অগ্রণী ব্যাংক লড়বে মিরপুর শের-ই বাংলার মাঠে। এক সময় জাতীয় দলে একসঙ্গে খেলা রাজিন ও হান্নান এই দুই দলের কোচের দায়িত্বে আছেন। আবাহনী দিয়ে পুরোদমে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করছেন হান্নান, অন্যদিকে রাজিন রয়েছেন অগ্রণী ব্যাংকের দায়িত্বে। সোমবারের ম্যাচের আগে তারা ঢাকা পোস্টকে নিজেদের ভাবনা জানিয়েছেন।
হান্নান-রাজিন মাঠে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হলেও মাঠের বাইরে স্রেফ বন্ধু। একে অপরে দুজনের কাঁধটাতে বিশ্বস্ত নির্ভরতার হাত রাখছেন ঠিকই। হান্নানকে কোচিংয়ে স্বাগত জানিয়ে রাজিন সালেহ বলেছেন, ‘আমার বন্ধুর সঙ্গে খেলা, আমি আসলে পজেটিভ সাইনই দেখতেছি। মাঠের ভেতরে তো কম্পিটিশন করবে ক্রিকেটাররা, প্ল্যান অবশ্য বাইরে থেকে আমরা দেব। আমার বন্ধুর সঙ্গে কোনো প্রতিযোগিতা নেই। সে তার কোচিং করাবে, আমি আমার কোচিং করাব। আমার চিন্তা ভাবনায় আমি যাব, সে তার প্রসেসে যাবে। আমার বন্ধুর জন্য সবসময় শুভকামনা।’
রাজিন অবশ্য আবাহনীর বিপক্ষে জয়ের কথাই ভাবছেন। আগাতে চান নিজেদের পরিকল্পনা অনুসারেই, ‘আমাদের যে প্রসেস আছে আমরা সেভাবেই এগিয়ে যেতে চাই। তাহলে আবাহনীকে হারাতে সহজ হবে। আমরা অবশ্যই জিততে চাই।’
জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটাররা এখন কোচিং পেশায় ফিরছেন, যেটা ভালো দিক বলে মনে করেন রাজিন। গেল বছর কোচিংয়ে এসেছেন মোহাম্মদ আশরাফুল, সবশেষ আসলেন হান্নানও। বিষয়টিকে দেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো মনে করছেন রাজিন, ‘এটি একটা ভালো দিক, জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা এখন কোচিংয়ে আসতেছে। আশরাফুলের মতো ক্রিকেটারও কোচিংয়ে এসেছে। যা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য আগামীতে ভালো হবে।’
এদিকে বন্ধু রাজিনের বিপক্ষে জয়ের প্রত্যাশা হান্নান সরকারেরও। রাঙাতে চান নিজের নতুন অধ্যায়ের অভিষেক। বন্ধু রাজিনের জন্য শুভকামনা জানালেও, তার দল অগ্রণী ব্যাংকের ক্ষেত্রে ভিন্ন মনোভাব হান্নানের। কারণ তার কাছে নিজের জয়টাও গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন
বিসিবির সাবেক নির্বাচক থেকে কোচের গুরুদায়িত্ব পাওয়া হান্নান বলছিলেন, ‘আমার লক্ষ্য একটাই, দলকে জেতানো। তার জন্য যে প্রসেসে কাজ করা দরকার সেটাই করতেছি। আর বিপক্ষ দলের দুর্বল বা শক্তিশালী যে জায়গাগুলো আছে সেগুলো নিয়ে কাজ করতেছি। পুরো কাজ করে আমরা মাঠে নামব। আর আমার বন্ধু রাজিনের জন্য শুভকামনা থাকবে। কিন্তু অগ্রণী ব্যাংকের জন্য সেটি থাকবে না, দিনশেষে আমার ম্যাচ জেতাটা জরুরি।’
আবাহনীর মতো দলের প্রধান কোচ হয়ে হান্নান নিজের দায়িত্ববোধ ও চাপের কথাও শোনালেন, ‘আসলে কোচিংয়ে এসে শুরুতে এই ধরনের একটা বড় দলে কাজ করার পজিটিভ দিক থাকে। আবার সবার নজরও থাকে, শেষ বছর চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা, সেটা ধরে রাখার বিষয় আছে। একটা বাড়তি চাপ তো আছেই। তবে আমি আসলে এতটা দূর চিন্তা করি না। আমি ম্যাচ বাই ম্যাচ ভালো করার চিন্তা করতেছি।’
এসএইচ/এএইচএস