পিএসজি সমর্থকদের লাগামছাড়া উদযাপন থেকে আটক ২৯৪

প্যারিসিয়ান সেইন্ট জার্মেইয়ের (পিএসজি) সমর্থকদের এখন উদ্দাম উদযাপনে ফেটে পড়ারই কথা। কাতারি ধনকুবের নাসের আল খেলাইফি এমন সাফল্য পেতে কত বড় সব প্রজেক্ট ও বিনিয়োগই না করেছেন। দলে নিয়েছিলেন সময়ের সব সেরা তারকাদের। যদিও লিওনেল মেসি, নেইমার জুনিয়র ও কিলিয়ান এমবাপের মতো আক্রমণত্রয়ীও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতাতে পারেননি। লুইস এনরিকের তারুণ্য নির্ভর দল সেটাই সত্যি করেছে।
মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় একপেশে ফাইনালে ইন্টার মিলানকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে পিএসজি। ৫-০ গোলের বড় জয় কেবল পিএসজির জন্য ইতিহাসগড়া ম্যাচই নয়, চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসেও সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। এমন আক্ষেপ ঘোচানোর পরপরই পিএসজির সমর্থকরা প্যারিসে বিজয় মিছিল শুরু করে। নানা আতশবাজি, আলোর ঝলকানি ও চরম সুখের উল্লাসে মেতে ওঠে প্যারিসের রাত। পিএসজির রঙে রঙ্গিন হয় আইকনিক আইফেল টাওয়ারও। যেন জার্মানির মিউনিখ নয়, ফাইনালটাও রোমান্টিক এই নগরীতেই হয়েছে!
ফাইনালে নিজেদের শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পরই প্যারিসের চ্যাম্পস-ইলিসেস অ্যাভিনিউতে বিশাল প্যারেড শোভাযাত্রা শুরু করে ফরাসিরা। যা আর্ক দ্য ট্রায়ম্প এলাকায় পৌঁছাতেই সমর্থকদের একটি অংশের আচরণ আরও বিশৃঙ্খলায় রূপ নেয়। একপর্যায়ে তাদেরকে থামাতে জলকামান থেকে পানি ছিটায় পুলিশ। তারা জানিয়েছে, সমর্থকদের একটি উগ্র অংশ পুলিশি ব্যারিকেড টপকে তাদের মুখোমুখি মোকাবিলার চেষ্টা চালায়। ফলে ওই সময় ২৯৪ জনকে আটক করা হয়েছে।

এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে সংবাদ সংস্থা এপি। প্রতিবেদনে বলা হয়, আটককৃতদের কেউ কেউ চ্যাম্পস-ইলিসেস অ্যাভিনিউ’র কিছু দোকানে হামলা ও লুট করার অভিযোগও রয়েছে। দুটি গাড়িতেও আগুন ধরিয়ে দেন তারা। সমর্থকদের উদ্দাম আচরণ দেখে সংযত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন পিএসজির তারকা ফরোয়ার্ড উসমান দেম্বেলে। তিন সম্প্রচার চ্যানেল ক্যানেল প্লাসের সামনে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘উদযাপন করুন, তবে প্যারিসের সব ভেঙে-চুরে নয়।’
আরও পড়ুন
তবে এমন আনন্দঘন মুহূর্তে যেন কেউ কারও কথা শুনতে প্রস্তুত নয়। দে লা বাস্তিলে এলাকায় বড় সব স্থাপনার ওপরে উঠে গান, নৃত্য ও আতশবাজি বাজিয়েছেন সমর্থকরা। আর সড়কে তখন ইঞ্জিনে উচ্চশব্দ তুলে মোটরসাইকেল চলছিল, আশপাশ থেকে তাতে আবার উৎসাহ দেন বাকিরা। এ ছাড়া আরও কিছু এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান সমর্থকরা। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মাঝে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে।
— Charles Baudry (@CharlesBaudry) May 31, 2025
প্যারিসে যেকোনো বড় ম্যাচ ঘিরেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। ইউসিএল ফাইনাল তাদের ভূখণ্ডে না হলেও ম্যাচের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী যেহেতু তাদের ক্লাব পিএসজি, সে কারণে আগে থেকেই সতর্কতা হিসেবে চ্যাম্পস ইলিসেসে ৫৪০০ পুলিশ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছিল। এ ছাড়া সমর্থকরা বিশাল জমায়েত করেছিলেন পিএসজির ঘরের মাঠ পার্ক দ্য প্রিন্সেসে। সেখানেই তারা খেলা দেখেছেন। ৪৯ হাজার ধারণক্ষমতার ওই প্রাঙ্গণেও কড়া পাহারায় ছিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এএইচএস