নিয়াজ, রাজীব খেলছেন, এশিয়াডে খেলছেন না জিয়া

এশিয়ান গেমসে দাবা ডিসিপ্লিন সব সময় থাকে না। গত দুই এশিয়াডে ছিল না দাবা। চীনে হাংজু এশিয়াডে আবার দাবা ফিরছে। বাংলাদেশ এই ডিসিপ্লিনে অংশগ্রহণ করবে। চারজন পুরুষ দাবাড়ু সঙ্গে থাকছেন দুই জন নারী দাবাড়ু। পুরুষ দাবাড়ুরা ব্যক্তিগত ও দলগত উভয় ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন আর নারী দাবাড়ুরা শুধু ব্যক্তিগত ইভেন্টে।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দাবাড়ুদের নাম প্রেরণের ক্ষেত্রে জাতীয় দাবাকেই প্রাধান্য দেয় ফেডারেশন। এবার জাতীয় দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন এনামুল হোসেন রাজীব। রানার্স আপ হয়েছিলেন আরেক গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান। তৃতীয় স্থান ছিল উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদের। চতুর্থ হয়েছিলেন মেহেদী হাসান পরাগ।
দাবা ফেডারেশন জাতীয় প্রতিযোগিতার প্রথম চারজনকেই এশিয়াডে পাঠাতে চেয়েছিল। জিয়ার অনাগ্রহতায় এশিয়াড খেলার সুযোগ হয়েছে আন্তর্জাতিক মাস্টার মিনহাজ উদ্দিন সাগরের। জিয়া এশিয়ানে খেলবেন না এজন্য পঞ্চম স্থানে থাকা তার ছেলে তাহসিন তাজওয়ারও নাম দেননি। ফলে ষষ্ঠ স্থানে থাকা মিনহাজউদ্দিন সাগর এশিয়াড দলে সুযোগ পেয়েছেন।
এশিয়ান গেমসে দল নির্বাচন প্রসঙ্গে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাহাবউদ্দিন শামীম বলেন, ‘প্রথমে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন একজন পুরুষ ও একজন নারী দাবাড়ুর নাম দিতে বলেছিল। আমরা দাবি জানিয়েছিলাম একটি পুরুষ ও একটি নারী দল পাঠানোর। পরবর্তীতে তারা তিনজন নারী ও তিন জন পুরুষ দাবাড়–র নাম দিতে বলে। কোটা ছয় জন হওয়ায় আমরা খেলার সুবিধার্থে চার জন পুরুষের সমন্বয়ে একটি দল। ও দুই জন নারী দাবাড়ু নির্বাচিত করেছি। গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান রানার্স আপ ছিলেন। তিনি ব্যক্তিগত কারণে খেলবেন না। এজন্য অন্য পজিশন থেকে আমরা দাবাড়ু নির্বাচন করেছি।’
এশিয়ান গেমস না খেলার ব্যাপারে গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান বলেন, ‘এশিয়ান গেমসে খেলা অবশ্যই একটা বিশেষ মর্যাদা ও গর্বের। ২০০৬ দোহা এশিয়াডে আমি খেলেছি। এবার আমার সুযোগ ছিল খেলার। ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে ওই সময়ে খেলা সম্ভব হচ্ছিল না। এজন্য ফেডারেশনকে আমাকে নির্বাচিত না করার অনুরোধ করেছিলাম।’
বাবা না খেলায় ছেলে তাহসিন তাজওয়ার পঞ্চম হয়েও এশিয়াডে খেলার সুযোগ ছিল। নিজে যেহেতু যাচ্ছেন না তাই ছেলেকেও পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেননি জিয়া। ফলে ষষ্ঠ হয়েও আন্তর্জাতিক মাস্টার মিনহাজউদ্দিন সাগর এশিয়াডে খেলার সুযোগ পাচ্ছেন।
জিয়া এশিয়াডে না খেললেও তার এখন সুদিন চলছে। তার ছেলে তাহসিন সম্প্রতি ফিদে মাস্টার হয়েছেন। জিয়া নিজে গতকাল একটি দাবা টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। নিজের চেয়ে জিয়া এখন ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়েই বেশি ভাবেন। করোনা পরিস্থিতি উন্নতি হলে ছেলেকে নিয়ে ইউরোপ যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এশিয়াডে চার জন পুরুষ দাবাড়ুর সঙ্গে যাচ্ছেন দুই নারী দাবাড়ু ওয়াজফিয়া ও জান্নাতা। তারা জাতীয় মহিলা দাবা চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ। মহিলা দাবাড়ুদের দলনেতা হিসেবে এশিয়াডে যাবেন মাহমুদা চৌধুুরি মলি ও নিয়াজ-রাজীবদের দলনেতা হিসেবে থাকবেন ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক শোয়েব রিয়াজ আলম।
আগামীকাল শুরু জাতীয় জুনিয়র দাবা
আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে ওয়ালটন ৪০ তম জাতীয় জুনিয়র ( অনুর্ধ্ব ২০) দাবা চ্যাম্পিয়নশীপ। ওপেন ও বালিকা দুই ইভেন্টে অনুষ্ঠিত হবে প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন জেলা থেকে এই প্রতিযোগিতায় অনেক দাবাড়– অংশ নেবে। পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত অনেক দাবাড়ুরও এখানে অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। আজ দুপুরে দাবা ফেডারেশনে এই প্রতিযোগিতা উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রতিযোগিতার পৃষ্ঠপোষক ওয়ালটন গ্রুপের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর এফএম ইকবাল বিন আনোয়ার ডন, দাবা ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মাসুদুর রহমান মল্লিক, কার্যনির্বাহী সদস্য সজল, আন্তর্জাতিক বিচারক হারুনুর রশিদ।
এজেড/