জাতীয় বাজেটে কৃষিখাতে অঞ্চলভিত্তিক কৃষি প্রণোদনা ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে কৃষকরা বেশি লাভবান হবেন বলে তারা মত প্রকাশ করেন।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) অনুষ্ঠিত ‘জাতীয় বাজেট-২০২১-২০২২ : কৃষকের প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক অনলাইন আলোচনা সভায় তারা এ দাবি জানান। এতে সভাপতিত্ব করেন পবা চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। সঞ্চালনায় ছিলেন বারসিক’র পরিচালক পাভেল পার্থ।

অনলাইনে অনুষ্ঠিত এ সভায় অংশ নেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান, বানিপার সাধারণ সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, বারসিক’র পরিচালক এবিএম তৌহিদুল আলম, সৈয়দ আলী বিশ্বাস, মানিকগঞ্জের জেলা কৃষি উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি করম আলী মাস্টার, মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার নারী উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি সেলিনা বেগমসহ অনেকে।

সভায় কৃষি অর্থনীতিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘টাকার অংকে বিবেচনা করলে এবারের বাজেটে কৃষিখাতে বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে মোট শতাংশ হিসেব করলে প্রকৃতপক্ষে এবারে কৃষি বাজেট বাড়েনি। আগের বাজেটের বিষয়টি বিবেচনা করলে এবারের কৃষিতে বাজেট আরও বেশি গুরুত্ব পেতে পারত।

তিনি বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো, প্রতিবছর যে ভর্তুকি দেওয়া হয় সেটি খরচ হয় না। তাই সরকারকে ভাবতে হবে এই ভর্তুকি যাতে সঠিকভাবে ব্যবহার হয়। কৃষি উপকরণের জন্য ভর্তুকি কিছু রেখে বাকিটা যদি কৃষকের হাতে নগদ বিতরণ করা হয় তাহলে কৃষকরা উপকৃত হবেন।

কৃষি মূল্য কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছে অনেক বার উল্লেখ করে তিনি জানান, এটি খুব দরকারি এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি গঠিত হলে কৃষকরা তাদের পণ্যের ন্যায্যমূল্য পেতেন। এছাড়া কৃষকের কাছে যে ফসল সংগ্রহ করা হয় সেটা যদি মোট উৎপাদনের ১০ শতাংশ হয় তাহলে কৃষকরা লাভবান হবেন।

পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সোবহান অঞ্চলভিত্তিক কৃষি প্রণোদনা প্রচলনের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ভিন্ন ধরনের। বিভিন্ন অঞ্চল বিভিন্নভাবে দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে এবং মোকাবিলাও করছে। তাই অঞ্চলভিত্তিক প্রণোদনা ব্যবস্থা করা হলে কৃষকরা উপকৃত হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ও বারসিকের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সভায় বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- কৃষিপণ্যের সংরক্ষণাগার তৈরি করতে হবে, জাতীয় কৃষিমূল্য কমিশন গঠন করতে হবে, কৃষকের জন্য পেনশন স্কিম চালু করতে হবে, কৃষককে খাদ্যযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে, বাজেটে কৃষির ওপর বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে, নারীকেও কৃষক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে, কৃষি জমিতে ইটভাটা করা বন্ধ করতে হবে, কৃষি ভর্তুকির সুষম বণ্টন করতে হবে, অঞ্চলভিত্তিক কৃষি প্রণোদনা দিতে হবে, বজ্রপাতে মারা যাওয়া কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

একে/এমএইচএস