বাইকারদের জন্য ব্লুটুথ হেলমেট, কী কী সুবিধা রয়েছে এতে?
তরুণ প্রজন্মের কাছে বাইক মানেই রাইডিংয়ের আনন্দ, অ্যাডভেঞ্চার আর বন্ধুদের সঙ্গে লম্বা রোড ট্রিপ। কিন্তু রাস্তায় বাতাসের তীব্র শব্দে পেছনের আরোহীর কথা শোনা বা গ্রুপের অন্যান্য বাইকার বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে ফোনে দিকনির্দেশ শোনা বা জরুরি কল রিসিভ করাও ঝুঁকিপূর্ণ। এই সমস্যাগুলোর সহজ ও প্রযুক্তিনির্ভর সমাধান হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ব্লুটুথ হেলমেট। এটি শুধু নিরাপত্তা নয়, একসঙ্গে যোগাযোগ, বিনোদন ও সুবিধার নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে বাইকারদের জন্য।
যোগাযোগ ও বিনোদনে নতুন মাত্রা
বিজ্ঞাপন
প্রযুক্তিনির্ভর এই হেলমেটগুলো বাইকারদের জন্য এনেছে যোগাযোগ ও বিনোদনের নতুন সুবিধা। বাইকের দুই আরোহী কিংবা একাধিক রাইডার এখন একে অপরের সঙ্গে সহজেই কথা বলতে পারেন তাও বাড়তি ইন্টারকম ডিভাইস ছাড়াই। এতে গ্রুপ রাইডিংয়ের সময় যোগাযোগ রাখা অনেক সহজ হয়ে যায়।
নিরাপদে গান শোনার সুবিধা
বিজ্ঞাপন
বাইক চালাতে চালাতে হেডফোন বা ইয়ারফোন ব্যবহার করা অত্যন্ত বিপজ্জনক; সেক্ষেত্রে ব্লুটুথ হেলমেট সেই ঝুঁকি কমায়। এতে রয়েছে বিল্ট-ইন অডিও সিস্টেম, যার মাধ্যমে সরাসরি গান শোনা বা ভয়েস নোট শোনা যায়। তবে নিরাপত্তার জন্য গান শুনতে শুনতে বাইক না চালানোই উত্তম।
সহজ নেভিগেশন ও ফোন রিসিভ
চলন্ত অবস্থায় ফোনের স্পিকারে গুগল ম্যাপ শোনা প্রায় অসম্ভব। ব্লুটুথ হেলমেটের মাধ্যমে বাইক চালানোর সময় কানে স্পষ্টভাবে পথনির্দেশ শোনা যায়। প্রয়োজনে ফোন কলও রিসিভ করা যায়, যা প্রচলিত উপায়ে ফোন ধরার চেয়ে অনেক নিরাপদ। তবে এটাও মনে রাখা জরুরি, বাইক চালাতে চালাতে কথা বলা বিপজ্জনক হতে পারে।
আরও পড়ুন
ভবিষ্যতের হেলমেট প্রযুক্তি
বাংলাদেশে ক্রমেই বাড়ছে বাইকপ্রেমীর সংখ্যা, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে। সেই সঙ্গে বাড়ছে আধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জামের ব্যবহার। ব্লুটুথ হেলমেট তাই শুধু ফ্যাশনের অংশ নয়, বরং নিরাপত্তা ও স্মার্ট রাইডিংয়ের অংশ হয়ে উঠছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মত, সঠিক মানের ব্লুটুথ হেলমেট ব্যবহার করলে একদিকে যেমন দুর্ঘটনা কমানো সম্ভব, অন্যদিকে যাত্রা হয়ে ওঠে আরও আরামদায়ক ও প্রযুক্তিনির্ভর।
উল্লেখ্য, ভারতে সম্প্রতি উন্মোচিত ‘অ্যাক্সর এক্স অল্টোর অ্যাপেক্স স্মার্ট হেলমেট’ এমনই এক উদাহরণ। ব্লুটুথ ৫.২ ভার্সনের এই হেলমেট ১০ মিটার পর্যন্ত সংযোগ ধরে রাখতে সক্ষম। এতে রয়েছে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট, জেসচার কন্ট্রোল ও ওয়াটার রেজিস্ট্যান্ট ডিজাইন। একবার চার্জে এটি ২৫ ঘণ্টা পর্যন্ত গান ও ৩৬ ঘণ্টা পর্যন্ত কল চালাতে পারে। ভারতের বাজারে এর দাম প্রায় ৭,৯১০ রুপি; বাংলাদেশে এলে দাম পড়তে পারে আনুমানিক ১৫–২০ হাজার টাকার মধ্যে।
অন্যদিকে, মার্কিন ও দক্ষিণ কোরীয় প্রযুক্তির ‘সেনা ইমপালস ব্লুটুথ হেলমেট’ আরও উন্নত ও দামি মডেল, যাতে ব্যবহৃত হয়েছে হারমন কারডন-এর প্রিমিয়াম অডিও সিস্টেম। এতে ২৪ জন পর্যন্ত রাইডার সংযুক্ত থাকতে পারেন, আর এর ইন্টারকম রেঞ্জ সর্বোচ্চ ৫ মাইল পর্যন্ত। একবার চার্জে ১৮ ঘণ্টা কথা বলা যায়। ভয়েস কমান্ড, সান ভাইজর ও সেফটি লাইটসহ এই হেলমেটটি ডট ও ইসিই মানসম্পন্ন। বাংলাদেশের বাজারে এর দাম পড়তে পারে আনুমানিক এক লাখ টাকার ওপরে।
ডিএ