শেষ দিনে জমে উঠেছে ১৭তম আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘ট্রিপলাভার ঢাকা ট্রাভেল মার্ট-২০২২’। তিন দিনব্যাপী চলমান এই মেলার পর্দা নামছে আর কিছুক্ষণ পর। সকাল থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগমনে মুখর ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। 

আকর্ষণীয় ছাড় ও উপহারের কারণে ক্রেতারা স্টলে ভিড় করছেন, কেউ কেউ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটছেন। মেলায় ছাড় দেওয়ায় ক্রেতারা যেমন খুশি, তেমনি বিক্রি বেশি হওয়ায় বিক্রেতারাও আনন্দিত।

আয়োজকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের ধাক্কা সামলে দুই বছর পর পর্যটন মেলা শুরু হওয়ায় মানুষের মধ্যেও ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। বিচ্ছিন্নভাবে নয়, এক ছাদের নিচে পর্যটন কেন্দ্রিক সব ধরনের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে চালু হয়েছে ট্রিপ লাভার ‘ঢাকা ট্রাভেল মার্ট।’

বৃহস্পতিবার (২ জুন) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে মেলার উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। এবারের মেলায় প্রায় ৫০টি দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে জাতীয় পর্যটন সংস্থা, এয়ারলাইন্স, ট্যুর অপারেটর, হোটেল, রিসোর্ট, ট্রাভেল এজেন্সি, অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী সংস্থাও রয়েছে।

সস্ত্রীক মেলায় এসে শুরুতে কক্সবাজারের টিকিট কেটেছেন নাজমুল হাসান। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে কাঙ্ক্ষিত ছাড় পেয়ে  আবার তিনি মালদ্বীপের টিকিটের বিষয়েও দামদর করছেন। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, মেলা উপলক্ষে ভালো ছাড় পেয়েছি। এই উপলক্ষে ভাবলাম আগেই কক্সবাজার যাই, এরপর মালদ্বীপ..। এমন মেলা অন্তত ছয় মাস পরপর হওয়া উচিত।

পাঁচ দিনের সফরে মালদ্বীপের টিকিট নিয়েছেন রাজধানীর বেসরকারি একটি স্কুলের শিক্ষক মো. নাফিস ইমতিয়াজ। মেলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেলার শুরুর দিকে আসতে পারিনি তাই শেষ দিনটা মিস করলাম না। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স থেকে মালদ্বীপের টিকিট নিয়েছি। সাধারণত এই সময় কোন ডিসকাউন্ট থাকে না, তারপরও মেলায় এসে ভালো একটা ডিসকাউন্ট পেয়েছি।

তিনি বলেন, আমি একজন ভ্রমণ পিপাসু মানুষ, এ কারণে দেশে বিদেশে সবসময়ই বিমানে আসা-যাওয়া করা হয়। এক্ষেত্রে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সেই বেশিরভাগ সময় চলাচল করা হয়। কারণ তাদের সেবাটা আমার কাছে অন্যদের থেকে একটু আলাদা মনে হয়। বিশেষ করে লাগেজটা আমি তাড়াতাড়ি পাই। এছাড়া তাদের সিকিউরিটি, টাইম ম্যানেজমেন্ট খুব ভালো।

ট্রিপলাভারের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট শাখার ডেপুটি ম্যানেজার তনয় রয় ঢাকা পোস্টকে বলেন, তিন দিনের মেলার আজকেই শেষ দিন। এই মেলায় ট্রিপলাভার টাইটেল স্পন্সর ছিল। আমরা এখান থেকে ভালো রেসপন্স পেয়েছি। আমাদের যতটুকু প্রত্যাশা ছিল, তার থেকে ভালো সাড়া পেয়েছি। সবমিলিয়ে তিন দিনই আমাদের খুব ভালো কেটেছে।

তিনি বলেন, শেষ দিন হওয়ায় চাপ একটু বেশি। অনেক কোয়ারি আসছে। এছাড়া সাকসেসফুলি প্যাকেজগুলো হচ্ছে। মেলায় আমাদের ফোকাস ছিল এজেন্টদের নিয়ে, তাদের জন্য আমাদের একটা স্পেশাল প্রমোশন ছিল। এছাড়া ক্লায়েন্টের জন্য কিছু প্যাকেজ ছিল। আমাদের টিকিটে ১০ শতাংশ অফার ছিল। আশা করি আমরা সামনের বার আরও ভালো করতে পারব।

বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের জনসংযোগ শাখার উপ-ব্যবস্থাপক প্রদীপ গাঙ্গুলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, শেষ দিনে মেলায় ভালোই সাড়া পাচ্ছি। এর কারণ হলো, করোনার সময় মানুষ কোথাও ঘুরতে যেতে পারেনি। এখন আশা করছি মেলার মাধ্যমে আমরা আবারও পর্যটন সেক্টরকে সামনে নিয়ে আসতে পারব।

তিনি আরও বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ দর্শনার্থীর সংখ্যাও অনেক। মেলাটি যদি নিয়মিত আয়োজন করা যায়, তাহলে সেটি দেশের পর্যটন খাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।

ঢাকা ট্রাভেল মার্ট ২০২২-এর টাইটেল স্পন্সর ট্রাভেল এজেন্সি ট্রিপলাভার, কো-স্পন্সর ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। পার্টনার হিসেবে আয়োজনে সহযোগিতা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন।

টিআই/এসকেডি