নেপালের প্লেন দুর্ঘটনায় অন্তত ৬৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ওই প্লেনে ছিলেন এয়ার হোস্টেস ওশিন আলে মাগার। ২৪ বছরের ওই তরুণীও প্রাণ হারিয়েছেন ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায়। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন বাবা। মেয়েকে আটকাতে না পারার আক্ষেপ ভুলতে পারছেন না কিছুতেই।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) ছিল মাঘে সংক্রান্তি উৎসব। দিনটিকে এই নামেই উদযাপন করেন নেপালের লোকজন। উৎসবের দিনে মেয়েকে কাজে যেতে নিষেধ করেছিলেন ওশিনের বাবা মোহন। একটা দিন পরিবারের সঙ্গে আনন্দ করে কাটাতে বলেছিলেন তাকে। কিন্তু ওশিন বাবার কথা শোনেননি। তিনি বলেছিলেন, দু’টি ফ্লাইটে কাজ সেরে ফিরবেন। বাবার কথা না রাখতে পারলেও বাবাকে ওশিন কথা দিয়েছিলেন, তিনি ফিরে এসে পরিবারের সঙ্গে মাঘে সংক্রান্তি উদযাপন করবেন। কিন্তু নিয়তি তা হতে দিল না।

আরও পড়ুন >> নেপালে বিধ্বস্ত বিমানের ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার

ওশিনের বাড়িতে উৎসবের আয়োজন চলছিল, ঠিক সেই সময় এই প্লেন দুর্ঘটনার খবর পান তার বাবা। অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা  বাবা মোহন আলে বাগার চোখের জলে সেদিনের কথা মনে করে বলেন, বিশেষ দিন হওয়ায় ওইদিন সকালে তাকে কাজে যেতে নিষেধ করেছিলাম।

দু’বছর ধরে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের সঙ্গে কাজ করছিলেন ওশিন। তিনি নেপালের চিৎওয়ান জেলার বাসিন্দা। কর্মসূত্রে কাঠমান্ডুতে থাকছিলেন। বাবা, মাকেও নিজের কাছে ডেকে নিয়েছিলেন ওশিন। দুই বোন এবং এক ভাই আছে ওশিনের। নেপালের অক্সফোর্ড কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন ওশিন। উচ্চশিক্ষা নিয়েছেন ভারতে। তার স্বামী কাজের সূত্রে থাকেন ব্রিটেনে। 

রোববার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে ৭২ জন আরোহী নিয়ে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট উড়োজাহাজ এটিআর ৭২-৫০০ পোখরা বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টার সময় বিধ্বস্ত হয়। পুলিশ ও উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন যাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করতে পেরেছেন। নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব নেপাল-সিএএএন) কর্মকর্তারা বলেছেন, দেশটির ইতিহাসে গত ৩০ বছরের মধ্যে এত বড় প্লেন দুর্ঘটনার রেকর্ড নেই।

সূত্র : এনডিটিভি, আনন্দবাজার

জেডএস