কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পাহাড়ে আবারো আগুন লেগেছে। শনিবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদের পশ্চিম পাশের পাহাড়ে এ ঘটনা ঘটে। তবে কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে তা জানতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদ ও কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের মধ্যবর্তী লালন পাহাড় নামে পরিচিত এ পাহাড়ের প্রায় অর্ধেকটাই আগুনে পুড়ে গেছে। কোথাও বা আগুন জ্বলছে, কোথাও আগুন নিভে কালো বর্ণ ধারণ করেছে। বেশ কিছু পাখিকে পাহাড়ি জঙ্গলে আশ্রয় হারিয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে।

পরবর্তীতে আধাঘণ্টার প্রচেষ্টায় ক্যাম্পাসের কয়েকজন আনসার সদস্য ও শিক্ষার্থী মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। 

আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়া আনসারের এসিস্ট্যান্ট কমান্ডার বাচ্চু মিয়া জানান, হঠাৎ আগুন লাগার খবর শুনে ছুটে এসে দেখি এই পাহাড়ে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। পরে আরো কয়েকজন আনসার ও মামাদের (শিক্ষার্থী) সহযোগিতায় নেভাতে পেরেছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্যাম্পাসের এসব পাহাড়ে প্রশাসনের সুষ্ঠু তদারকির অভাবে বহিরাগতরা নিয়মিত যাতায়াত করে। ক্যাম্পাসের অনেকেই মনে করছেন আগুন লাগার পেছনে তাদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, আগুন লাগার ধরণ দেখে মনে হচ্ছে এটা হুট করে সিগারেট বা দুর্ঘটনা থেকে সৃষ্টি হয়নি। কারণ আগুন ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জ্বলছে। এটা বহিরাগতদের কাজ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 
 
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন, বিষয়টা আমি শোনামাত্রই সিকিউরিটি অফিসারকে ফোন দিয়ে বলেছি সেখানে আনসার পাঠিয়ে আগুন নেভাতে এবং কে বা কারা আগুন লাগিয়েছে খোঁজ নিতে। ক্যাম্পাসে অনেক ছোটখাটো পাহাড় আছে এগুলো সার্বক্ষণিক নজরে রাখা কঠিন। আগুন কীভাবে লেগেছে জানামাত্রই তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আগুন লাগার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাদেক হোসেন মজুমদার বলেন, ঘটনা জানার পর আমরা দ্রুত লোকবল পাঠিয়েছি এবং আগুন নেভানোর চেষ্টা করেছি। 

বারবার পাহাড়ে আগুন লাগা প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যেখানে আগুন লেগেছে সেখানে নিরাপত্তা প্রাচীর নেই। সেখানে যদি নিরাপত্তা প্রাচীর ও নিরাপত্তা চকি থাকতো তাহলে আমরা অবশ্যই নিরাপত্তার জন্য লোক পাঠাতাম। তখন আর এ ধরনের ঘটনা ঘটত না।

প্রসঙ্গত, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পাহাড়ে প্রায়শই আগুন লাগার বিষয়ে শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাসটির পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন অভয়ারণ্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিযোগ করা হলেও পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসন থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

এমএএস