রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলে এক ‘অবৈধ’ শিক্ষার্থীকে সিটে তুলতে হলে গেটে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকেলে হলের মূল ফটকে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন— ফলিত গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ও হল শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শামীম ওসমান এবং একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শফিউল্লাহ। তারা দুজনই শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।

হল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুরে হলে থাকা অনাবাসিক শিক্ষার্থী শফিউল্লাহকে ৪৩০ নম্বর কক্ষ থেকে নামিয়ে দেন হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হল গেটে তালা দেন শামীম ওসমান। পরে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা হলের তালা ভেঙে ফেলেন।

একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে এসে অবৈধ শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও হল গেটে তালা দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে ফেলার বিষয়ে শামীম উসমানের কাছে কৈফিয়ত চান হল প্রাধ্যক্ষ। পাশাপাশি ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে এবং এমন ঘটনা ভবিষ্যতে না ঘটানোর নিশ্চয়তা চেয়ে শামীম উসমানের কাছে লিখিত চান প্রাধ্যক্ষ। তবে লিখিত না দিয়েই চলে যান শামীম ওসমান।

এতে হলের ‘অবৈধ’ শিক্ষার্থী হওয়ায় হলের ২২০ নম্বর কক্ষ থাকা শামীম ওসমানের বিছানাপত্র হলের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে নামিয়ে দেন প্রাধ্যক্ষ। পরে নামিয়ে দেওয়া বিছানাপত্রগুলো সেই রুমের অন্যজনের দাবি করে হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের সামনে অবস্থান নেয় হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপরে প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে অমীমাংসিত অবস্থায় চলে যান ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত শামীম ওসমান বলেন, ৪৩০ নম্বর রুমে আমরা একটা ছেলেকে উঠিয়েছি। ছেলেটির অর্থনৈতিক সমস্যা ছিল। আমরা ডাবল বেডের রুমে অতিরিক্ত একটি বেড ঢুকিয়ে তাকে থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। প্রভোস্টকে ওই ছেলের আবাসিক কার্ড করে দিতে বলা হয়েছিল অনেকবার, কিন্তু করে দেয়নি। আজ ওই ছেলের অনুপস্থিতিতে প্রভোস্ট তার বিছানাপত্র নামিয়ে অন্য আরেকটি ছেলেকে উঠিয়ে দিয়েছেন। ওই ছেলের বিছানার নিচে ২০ হাজার টাকাও ছিল। এখন ২০ হাজার টাকাসহ তার আবাসিকতাও প্রদান করতে হবে।

হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শামীম ওসমান হলের অবৈধ শিক্ষার্থী হওয়া সত্ত্বেও এর আগে গত রমজানে ডাইনিংয়ের পাঁচটি প্লেট ভেঙেছিল। আজ আবার হল গেটে তালা দিল। আমি তাকে ভুল স্বীকার করে লিখিত আবেদন দিতে বলেছিলাম, কিন্তু সে দেয়নি। আমরা কাল বা পরশু প্রভোস্ট কাউন্সিলের মিটিং করব। সামগ্রিক সবকিছু নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। আপাতত দুটি বেডই আমরা অফিসে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনে রেখেছি।

মেশকাত মিশু/এসএসএইচ