মহান ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকা এবং অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে একেবারেই অজানা বলে উল্লেখ করেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার চেয়ারম্যান ও আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নেহাল আহমেদ।

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ঢাকা কলেজে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে  ‘ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। অধ্যাপক নেহাল আরও বলেন, ‘ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা স্পষ্ট দেখতে পাই, ১৯৪৭ সালে ভাষা, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যে কোনো মিল না থাকার পরও শুধুমাত্র ধর্মের দোহাই দিয়ে ১২শ মাইল ব্যবধানের দুটি পৃথক ভূখণ্ডকে এক করে পাকিস্তান নামক একটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। 

সমগ্র পাকিস্তানের ৫৬ শতাংশ মানুষের ভাষা বাংলা ছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, অন্যদিকে শুধু ৭.২ শতাংশ মানুষ কথা বলতো উর্দুতে। সেই উর্দুকেই পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী রাষ্ট্রভাষা করার জন্য জোর পাঁয়তারা শুরু করে। কিন্তু বাংলার মানুষ তা হতে দেয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় দেশভাগের পরপরই কলকাতায় একটি অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগঠন করার সিদ্ধান্ত হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল পিছিয়ে পড়া ও নিপীড়িত পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা। এর নেতৃত্ব দেন তৎকালীন ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ওই সময় কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরে বঙ্গবন্ধু  সরাসরি যুক্ত হন ভাষা আন্দোলনে। গঠিত হয় তমুদ্দিন মজলিস, এরপর রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। কিন্তু এসবের অধিকাংশ ইতিহাসই সাধারণ মানুষ এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে অজানাই রয়ে গেছে। আমাদের সোনালী এই ইতিহাস চর্চা করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষ জুড়ে শিক্ষার্থীদের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানাতে আমাদের এই কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি  জ্ঞানের অন্যান্য শাখায়ও সমানভাবে পারদর্শিতা প্রদর্শন করুক।’

আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এটিএম মইনুল হোসেন, মহান শহীদ দিবস ও অন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক পুরঞ্জয় বিশ্বাস প্রমুখ। 

এনএফ