ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদের আবাসিক হলগুলোতে কোনো নিয়ম না থাকলেও অদ্ভুত কিছু নিয়ম মানা হয় ছাত্রীদের হলগুলোতে। এসব নিয়মের পরিবর্তন চেয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর এক মানববন্ধন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন ছাত্রীরা। তবে আল্টিমেটাম শেষ না হতেই এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তারা।

মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, উপাচার্যকে করোনা থেকে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার সাত কার্যদিবসের মধ্যে ৬ দফা দাবির বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো, অনাবাসিক ও এক হলের ছাত্রীদের অন্য হলে ঢোকার ব্যবস্থা করা; খাবারের মান বৃদ্ধি ও প্রয়োজনীয় মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা; পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশুদ্ধ পানির ফিল্টার স্থাপন করা; হলের কর্মচারীদের দৌরাত্ম্য কমানো এবং ছাত্রীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ; হলে ফার্মেসি স্থাপন এবং কোনো ছাত্রী রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা করা; ও অগ্রিম অ্যাপ্লিকেশন ছাড়া নাম এন্ট্রির মাধ্যমে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত লেট গেইট দিয়ে ঢোকার ব্যবস্থা করা।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রী হলগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা কিছু অনিয়মের বিরুদ্ধে গত ৪ সেপ্টেম্বর আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে একটা মানববন্ধনের আয়োজন করেছিলাম। মানববন্ধনে আমরা ছয় দফা দাবি উত্থাপন করি এবং গত ৫ সেপ্টেম্বর উপাচার্য বরাবর ছয় দফা সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু উপাচার্য মহোদয়ের করোনা শনাক্ত হওয়ায় তার কাছে সরাসরি স্মারকলিপি প্রদান করা সম্ভব হয়নি। আমরা ই-মেইলের মাধ্যমে তাকে স্মারকলিপির একটা কপি প্রেরণ করেছি এবং তার অফিসে সরাসরি গিয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি।

এতে আরও বলা হয়, আমরা মানববন্ধনে ঘোষণা দিয়েছিলাম যে, তিন কার্যদিবসের মধ্যে আমাদের দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে আমরা তিন দিন পরে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব। কিন্তু উপাচার্য হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমাদের সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছে এবং পরবর্তী কর্মসূচির সময়সীমা বৃদ্ধি করতে হয়েছে। উপাচার্য সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তার সম্মানার্থে আমরা কোনো সরাসরি কর্মসূচি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে তিনি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করার সাত কার্যদিবসের মধ্যে আমাদের দাবি বাস্তবায়িত না হলে আমরা আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি পালন করব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের পক্ষে বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন আন্দোলনের সমন্বয়ক আশরেফা খাতুন, নুসরাত তাবাসসুম, উমামা ফাতেমা, নাফিসা ইসলাম সাকাফি এবং  রাফিয়া রেহনুমা হৃদি।

এইচআর/এসকেডি