নবীনদের আগমনে মুখর মতিহারের সবুজ চত্বর
প্রতি বছরের মতো এবারো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস। মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় নবীনদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা গেছে।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার, বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, সাবাশ বাংলাদেশ, টুকিটাকি চত্বর, ইবলিশ চত্বর, বিভিন্ন বিভাগের সামনের চত্বরে দলবেঁধে বসে আছে এক ঝাঁক নবীন শিক্ষার্থী। সর্বত্র যেন তাদেরই আনাগোনা। কোথাও আবার দেখা যাচ্ছে নবীন-প্রবীণদের পরিচয় পর্ব। যেখানে চলছে গান, গল্প, অভিনয়। কেউবা গোলাপ, কেউবা স্টিক হাতে গোটা ক্যাম্পাস ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউবা নতুন বন্ধু পেয়ে দলে দলে ঘুরছেন আর দেখছেন ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য। সব মিলিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণায় ক্যাম্পাস যেন খুঁজে পেয়েছে প্রাণের স্পন্দন।
বিজ্ঞাপন
বুকভরা আশা আর হাজারো স্বপ্ন নিয়ে আসা এই নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিতে প্রতিদিনের চেয়ে একটু অন্য রকম সাজ-গোজ করে এসেছিল প্রবীণরাও। এ যেন অন্য রকম এক উৎসব!
কৃষক বাবার বড় সন্তান লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা থেকে আসা মারুফ হোসেন বলেন, ‘জীবনে কখনো বাড়ির বাইরে থেকে পড়াশোনা করিনি। এই প্রথম বাবা-মাকে ছেড়ে এসেছি। খুব কষ্ট হচ্ছিল এখানে আসার দিন। তবে এত সুন্দর ক্যাম্পাস দেখে সব কষ্ট উধাও হয়ে গেছে।’
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, ‘আমার বাবা কৃষক। নিজস্ব জমি-জমাও তেমন নেই। অনেক কষ্টে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এসেছি। বাবার কষ্টের মূল্য দিতে চাই। ভালো করে পড়াশোনা করে একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চাই।’
বরণ অনুষ্ঠান শেষে সবাই যখন একাডেমিক ভবন থেকে বেরিয়ে আসে, তখনই আনন্দের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সবার হাতে হাতে ফুল, একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন, চোখে-মুখে নতুন উদ্যম। অনেকে আবার বসে পড়েছে আনন্দ আড্ডায়। প্রবীণদের কেউ কেউ আবার গান ধরেছে মনের আনন্দে।
মনোবিজ্ঞান বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী আল সামিন ইয়াসির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন আমার জন্য একটি বহু প্রতীক্ষিত দিন। বরাবরই রাবি ক্যাম্পাস আমার কাছে স্বপ্নের মতো। ক্যাম্পাসে এসে র্যাগিং নিয়ে একটু ভয়ে ছিলাম। তবে এসবের কোনো কিছু দেখিনি। পেয়েছি বড়দের উষ্ণ অভ্যর্থনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, নবীন শিক্ষার্থীদের স্মৃতির পাতায় স্থান করে নেবে আজকের এই দিনটি। তাদের পাশে সব সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা সকল সমস্যা কাটিয়ে উচ্ছ্বাসে দিন কাটবে নবীনদের।
এসপি