জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে ওঠা যৌন নিপীড়ন ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগের তদন্ত এবং তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।  বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবনের শিক্ষক লাউঞ্জে ‘জাহাঙ্গীরননগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দের’ ব্যানারে এক সংবাদ সম্মেলন এ দাবি জানান তারা। 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনিছা পারভীন।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে নানা গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্ববহ দুটি অভিযোগ শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টরের পদ ব্যবহার করে এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন এবং তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে প্রভাব বিস্তার। অন্য অভিযোগটি হলো- আরেক ছাত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন ও তাকে গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করা।

অধ্যাপক আনিছা পারভীন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী এগুলো নৈতিক স্খলন ও অসদাচরণজনিত অপরাধ। এসব ঘটনার সত্যতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে বেশ কিছু ফটোগ্রাফ, চ্যাটবক্সের স্ক্রিনশট এবং অডিও ক্লিপের মাধ্যমে। এসব তথ্য-উপাত্ত বিশ্ববিদ্যালয় কমিউনিটি, সংবাদপত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অভিযোগগুলো প্রমাণের পক্ষে বেশ কিছু তথ্য-উপাত্ত আমাদের কাছেও রয়েছে। আমরা মনে করি, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত থেকে এটা স্পষ্ট যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি শিক্ষকতার পদে যুক্ত থাকার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছেন। আমরা অভিযোগগুলো তদন্তের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং নিম্নলিখিত দাবি জানাচ্ছি।

দাবিগুলো হলো- অভিযোগ তদন্তে অবিলম্বে একটি স্ট্রাকচারাল কমিটি গঠন করা, প্রাথমিক সত্যতা থাকায় বিধি অনুযায়ী অভিযুক্তকে তার সকল পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত এবং তদন্ত সাপেক্ষে তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া।

অভিযোগগুলোকে ‘গুরুতর’ দাবি করে আগামী ৮ ডিসেম্বরের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান তিনি। অন্যথায় ৮ ডিসেম্বরের পর কঠোর আন্দোলনের হুমকি দেন। 

তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কখনো যৌন নিপীড়ককে আশ্রয় দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি এ অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত না করে তবে আমরা আমাদের আন্দোলনের পথ বেছে নিতে বাধ্য হব।

সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক সোহেল রানা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মানস চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক ফাহিমা আল ফারাবী, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রনু, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আবু সাঈদ মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আলকামা/আরএআর