শিক্ষক সমিতির নির্বাচন আজ : নীলের আধিপত্য নাকি সাদার চমক?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকরী পরিষদ ২০২৩-এর নির্বাচন আজ বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর)। সকাল ১০টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একইদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
সমিতির সংবিধানের ৬-ক ধারা অনুযায়ী এ নির্বাচনের মাধ্যমে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকর পরিষদ গঠন করা হবে। এবারের নির্বাচনে সাদা দল থেকে ১৫ জন এবং নীল দল থেকে ১৫ জনের প্যানেল চূড়ান্ত হয়েছে। এর বাইরে নীল দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী (সভাপতি) হিসেবে নির্বাচনে থাকছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দিন।
বিজ্ঞাপন
সে হিসেবে ১৫টি পদের জন্য লড়বেন ৩১ জন প্রার্থী। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১ হাজার ৯৫৭ জন। নির্বাচন পরিচালক হিসেবে থাকছেন ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে শিক্ষক সমিতিতে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের প্যানেল জয়ী হয়ে আসছে। গত বছরের নির্বাচনে ১৫ পদের ১৪টিতেই জয় পেয়েছিলেন এ প্যানেলের প্রার্থীরা। আগের চেয়ে এবার ভালো ফলাফল প্রত্যাশা করছে সাদা দল।
বিজ্ঞাপন
নীল দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন যারা :
নীল দল থেকে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে লড়বেন পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়াঁ, সাধারণ সম্পাদক পদে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা। এছাড়া সহ-সভাপতি পদে রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল, কোষাধ্যক্ষ পদে মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু খালেদ মো. খাদেমুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এছাড়া ১০টি সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ জেএম শফিউল আলম ভূইয়া, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান, গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. চন্দ্র নাথ পোদ্দার, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আমজাদ আলী, রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান, ক্রিমিনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউর রহমান, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী আক্কাছ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো মাকসুদূর রহমান, জিন প্রকৌশল ও জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফ আখতারুজ্জামান এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড শারমিন মুসা।
সাদা দল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন যারা :
সাদা দলের সভাপতি প্রার্থী পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছিদ্দিকুর রহমান খান। এছাড়া সহ-সভাপতি পদে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক মো.লুৎফর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে মৃৎশিল্প বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক দেবাশীষ পাল, কোষাধ্যক্ষ পদে ব্যবসায় প্রশাসন ইনিস্টিউটের অধ্যাপক ড. মো. মহিউদ্দিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এছাড়া ১০টি সাধারণ সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন- রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম, একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আল আমিন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, ফার্মাসিউটিক্যাল কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল মজিদ, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ, বিশ্ব ধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাফী মোহাম্মদ মোস্তফা, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল করিম, ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নুরুল আমিন, একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনিস্টিউটের অধ্যাপক ড. মো. সিরাজুল ইসলাম।
সাদা দলের আহবায়ক ও সহ-সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা সবসময় শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সোচ্চার ছিলাম। এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা ভাতা, যাতায়াত ভাতা, ইনক্রিমেন্ট, টেলিফোন ভাতা পুনর্বহালসহ অন্যান্য পেশাগত সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছি। আশাকরি এবার ফলাফল আগের চেয়ে ভালো হবে আমাদের।
নীল দলের সভাপতি প্রার্থী অধ্যাপক ড. মো. নিজামুল হক ভূইয়াঁ ঢাকা পোস্টকে বলেন, নীল দল সবসময় শিক্ষকদের পাশে থেকে কাজ করছে। শিক্ষকদের দাবি দাওয়া আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। যার ফলে শিক্ষকরা নীল দলকেই বিজয়ী করে আসছে। এবার আমাদের দল থেকে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও আমরা শতভাগ জয় নিয়ে ফিরতে পারবো বলে আশা করছি।
নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে নির্বাচন পরিচালক অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার ঢাকা পোস্টকে বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন। যথাসময়ে সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন শুরু এবং শেষ করতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী। ১৫টি পদের জন্য লড়বেন ৩১ জন প্রার্থী। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১ হাজার ৯৫৭ জন। অন্তত ১৫০০ জন শিক্ষক তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভোট দেবেন বলে আশা করছি।
এইচআর/এফকে