প্রকাশনা সংস্থা আদর্শকে অমর একুশে বইমেলা-২০২৩ এ স্টল বরাদ্দ না দেওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৫৯ বিশিষ্ট নাগরিক। শনিবার (২১ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।

এতে বলা হয়, ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের মূলনীতি ছিল; মানবিক মর্যাদা, আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা রাষ্ট্র দেবে। সেক্ষেত্রে একজন লেখকের বইয়ে তার মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাও রতি হবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি। কিন্তু গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, আদর্শ প্রকাশনাকে তিনটি বইয়ের নাম উল্লেখ করে বইমেলায় অংশগ্রহণের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা চলছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এটা বাক স্বাধীনতা হরণের পাশাপাশি আইনের শাসনের প্রতিও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি। কোনো রকম নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে এভাবে আদর্শ প্রকাশনাকে বইমেলায় অংশগ্রহণে বাধা দেওয়া গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী। বাংলা একাডেমিকে বলা হয় ‘বাঙালির মেধা ও মননের প্রতীক’। সেই বাংলা একাডেমি কেন নিজেদের দলীয়করণের সুযোগ দেবে?

আরও পড়ুন : বইমেলা বর্জনের হুমকি নুরের

আদর্শ প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, এটা শুধু নিন্দনীয় নয়, একই সঙ্গে লেখকের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল। এখানে দেখা যাচ্ছে, কণ্ঠরোধ করতে বাংলা একাডেমিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি বইমেলাকে কেন্দ্র করে সারা বছরের প্রস্তুতি, আর্থিক বিনিয়োগসহ প্রকাশনা সংশ্লিষ্ট আরও অনেকের কর্মসংস্থানেও বাধা সৃষ্টি করবে। আমরা দ্রুত আদর্শকে বইমেলায় প্রাপ্য অনুযায়ী স্টল বরাদ্দের পাশাপাশি বইমেলাকে কেন্দ্র করে লেখক, প্রকাশকের স্বাধীনতা যাতে অক্ষুণ্ন থাকে তা নিশ্চিতের জোর দাবি জানাই।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন যারা :  লেখক ও রাজনীতিবিদ বদরুদ্দীন উমর, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক, কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার, অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নারীনেত্রী ফরিদা আকতার, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সাঈদ ফেরদৌস, ঢাবির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস, লেখক ও সংগঠক মুনির হাসান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, প্রকাশক মাহরুখ মহিউদ্দীন, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. তানজীম উদ্দিন খান, লেখক ও প্রকৌশলী চমক হাসান, লেখক ও অধ্যাপক রাগিব হাসান, কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।

রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন, প্রকাশক দীপগ্ধকর দাশ, লেখক ও সংগঠক ফিরোজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুল হাসান মামুন, লেখক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. মারুফ মল্লিক, লেখক রাখাল রাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ আজম, প্রকাশক মেসবাহউদ্দিন, লেখক ও রাজনীতিবিদ ড. জাহেদ উর রহমান, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক সালাহ উদ্দিন শুভ্র, কথাসাহিত্যিক বাকি বিল্লাহ, লেখক ও প্রকাশক নাজিম উদ্দিন, কবি ও সাংবাদিক ফারুক ওয়াসিফ, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ, নির্মাতা তাসমিয়া আফরিন মৌ, লেখক ও গবেষক জাকারিয়া পলাশ, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, গবেষক সাইমুম পারভেজ, লেখক ও সাংবাদিক শিবলী আহমেদ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুতাসিম বিল্লাহ প্রমুখ।

এইচআর/এসকেডি