ঢাবির ক্ষণিকা বাসে মারধরের পর ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগের চেষ্টা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টঙ্গী-গাজীপুর রুটের পরিবহন ক্ষণিকা বাসে এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার ক্ষণিকার ৬২১৩ নম্বর বাসে এ ঘটনা ঘটে। এরপর ভুক্তভোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুর থানায়। সেখানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার চেষ্টা করা হলে ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে অভিযোগ নেয়নি পুলিশ।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ঢাবির টেলিভিশন ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের মাসুম বিল্লাহ শাওন গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযুক্তরা হলেন, ক্ষণিকা বাস কমিটির সভাপতি আতিকুল ইসলাম আতিক, সাবেক সভাপতি রবিউল ইসলাম সানি, সাবেক পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের এহসান সাদি খান, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান।
প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী ও অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের বাসে যাতায়াতের সময় শাওনের পরিচয়পত্র দেখতে চান কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরিচয়পত্র দেখানোর পরেও তিনি কোথায় নামবেন জানতে চাওয়ায় শাওন তাদের কাছে জানতে চান, ‘আপনারা হেল্পার নাকি কন্ডাক্টর?’। এ কথা বলায় শাওনের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান তারা। এক পর্যায়ে মগবাজার ফ্লাইওভারে মারধর করে তাকে বাস থেকে নামিয়ে দেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা। বাসে থাকা অন্য শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের সহায়তায় আবারও বাসে ওঠেন শাওন। বাস উত্তরায় থামলে তিনি নিচে নামেন। এরপর ‘বেয়াদব’ অভিহিত করে আতিকুল ও রবিউলের নেতৃত্বে শাওনকে পুনরায় মারধর করা হয়।
বিজ্ঞাপন
মারধর ও বাগবিতণ্ডার সময় শাওন ফোনে ভিডিও করলে বাসের সভাপতি আতিক ফোন কেড়ে নিয়ে তা ডিলিট করে দেন। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ফোনটিও ভেঙে যায়। এরপর শাওনের বাবাকে ফোন দিয়ে থানায় এনে অভিযোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন তারা।
ভুক্তভোগী শাওন বলেন, নিজেদের বাসেই আমরা নিরাপদ নই। আমার ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে, আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে আমার সহপাঠীরা বাস কমিটির নেতৃত্বে আমাকে মারধর করেছে। নিজেকে এতো অনিরাপদ কখনো মনে হয়নি। আমি এই ঘটনার বিচার চাই।
অভিযুক্ত আতিক বলেন, আমি সমাধান করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু ছেলেটি জুনিয়র হয়েও সিনিয়রের সামনে বেয়াদবি করেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (দক্ষিণ) অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিশ কমিশনার হাফিজুল ইসলামের কাছে এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে অভিযোগ করতে এসেছিলেন কয়েকজন। তবে ঘটনাটি আমাদের আওতাধীন এলাকায় না ঘটায় অভিযোগ নেওয়া হয়নি।
প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি পরিবহন ম্যানেজারকে যাচাই করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এইচআর/এসকেডি