সম্প্রতি ‘বিজ্ঞানময় কৃষি, সমৃদ্ধিময় আগামী’ শীর্ষক স্লোগান নিয়ে অ্যাগ্রিকালচারাল অলিম্পিয়াড সিজন-২ শুরু হয়। এবারের সিজনে প্রায় ৩৩টি ইনস্টিটিউট থেকে প্রায় এক হাজার ৬০০ জন অংশগ্রহণ করেছিলেন। যার মধ্যে ফাইনাল রাউন্ডে ৮টি ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা করে প্রায় আশিজন এবং সেখান থেকে প্রত্যেকে ক্যাটাগরিতে তিনজন বিজয়ী, সেরা তিনজন ভলান্টিয়ার ও সেরা চারজন সংগঠকসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম কনফারেন্স হলে এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

‘বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচারাল অলিম্পিয়াড’ আয়োজিত এবারের আয়োজনটির মূল উদ্দেশ্য ছিল কৃষিকে আরও টেকসই এবং উন্নত করতে কৃষি বিষয়ক শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক ও এ বিষয়ে আগ্ৰহী করে তোলা।

এবারের অলিম্পিয়াডে ছিল ৮টি ক্যাটাগরি- অ্যাগ্রিকালচার, ফিশারিজ, অ্যানিম্যাল প্রডাকশন, অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল ইকোনোমিকস, ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স, অ্যাগ্রিকালচারাল ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি, অ্যানিম্যাল হেলথ অ্যান্ড বায়োসিকিউরিটি।

সিজনের প্রথম ধাপে ২০ মিনিটের কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। কুইজ শেষে প্রশ্নত্তোর পর্বের আয়োজন করা হয়, যেখানে সেরা ৩টি প্রশ্ন বাছাই করা হয়। এসময় অ্যাগ্রিকালচার, অ্যাগ্রিকালচারাল ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি, অ্যানিমেল প্রোডাকশন, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স, অ্যানিমেল হেলথ অ্যান্ড বায়োসিকিউরিটি, ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন, অ্যাগ্রিবিজনেস অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল ইকোনোমিক্স এবং ফিশারিজসহ মোট ৮টি ক্যাটাগরির ওপর পুরষ্কার দেওয়া হয়। প্রতি ক্যাটাগরিতে তিনজন করে মোট চব্বিশজনকে এবং সেরা তিনজন প্রশ্নকর্তাকে পুরস্কৃত করা হয়। পুরষ্কার হিসেবে সার্টিফিকেট, মেডেল, বই ও গিফট বক্স দেওয়া হয়।

এসময় বেস্ট ক্যাম্পাস হিসেবে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি), শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (শেকৃবি) এবং খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে পুরষ্কার দেওয়া হয়। এছাড়াও বেস্ট ভলান্টিয়ার হিসেবে তিনজন এবং বেস্ট অর্গানাইজার হিসেবে চারজনকে পুরষ্কার দেওয়া হয়।

এদিন অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. এম এ রহিম, ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ছোলায়মান আলী ফকির, ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. ফাতেমা হক শিখা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কের পরিচালক অধ্যাপক ড. মাহফুজুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তোফাজ্জল ইসলাম, ইয়ুথ ইনফ্লুয়েন্সার এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েটর মাসুদা খান।

এসময় ড. এম এ রহিম বলেন, শিক্ষার্থীরা এক্সট্রাকারিকুলার অ্যাক্টিভিটিতে যত বেশি সম্পৃক্ত থাকবেন, তাদের দক্ষতা তত বাড়বে। এছাড়া অ্যাগ্রিকালচারাল অলিম্পিয়াডের মতো এক্সট্রাকারিকুলার অ্যাক্টিভিটি আমাদের আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। বর্তমানে আমাদের ১০ হাজারের বেশি জার্মপ্লাজম আছে। আমাদের উদ্ভাবিত জাতগুলো বাউ কুল, বাউ পেয়ারা নামেই বহির্বিশ্বে পরিচিত। আমাদের দেওয়া নামেই ফলগুলো চাষ হচ্ছে।

বাংলাদেশ অ্যাগ্রিকালচারাল অলিম্পিয়াড কর্তৃক সফল এ আয়োজনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালক মো. আতিকুর রহমান। তার সমাপনী বক্তব্যের মধ্য দিয়েই শেষ হয় পুরো আয়োজনটি। এ ইভেন্টকে সফল করতে এবারের আয়োজনে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ছিল এডুকেশন স্টার্ট আপ- লজেন্স।

এবারের ইভেন্টে বিজয়ীরা হলেন, অ্যাগ্ৰিকালচার ক্যাটাগরিতে শারজানা আক্তার (বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়), এস কে রেজওয়ানা কাদির রাইসা (শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) ও সৌরভ কুমার মন্ডল (শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়),   অ্যানিম্যাল প্রোডাকশন ক্যাটাগরিতে জান্নাতুল ফেরদৌসি জান্নাত (বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়), মো. রাকিব হাসান মুবীন (বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়) ও  জিহাদুল ইসলাম সিনজন (সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়)। অ্যাগ্ৰিবিজনেস অ্যান্ড অ্যাগ্ৰিকালচারাল ইকোনমিক্স ক্যাটাগরিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মুসকানা ইসলাম রিদি, রুদ্রনীল মন্ডল ও তফিকুল ইসলাম, অ্যানিম্যাল হেলথ অ্যান্ড বায়োসিকিউরিটি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাহমিদ ঈশাদ রুপাই, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাখী রেজওয়ানা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়জিদ মিয়া। ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইনসাতুন নাহার সূচনা, তাসনিম ইকবাল মাইশা ও ফাতেমা বিনতে লতিফ। অ্যাগ্ৰিকালচারাল ইনোভেশন অ্যান্ড টেকনোলজি ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আফিয়া মাহমুদা আনিকা, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাসনিম সানজিদা হক চৌধুরী, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্ৰিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে মো. মেহবুব উদ্দিন ভূঁইয়া।

বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স ক্যাটাগরিতে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাহসিনা তাবাসসুম নাবিলা ও নাজিয়া ফারহিন জুমু, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মো. আবু হানিফ। ফিশারিজ ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তানজুমা তাসনিম হিরা, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তানজিলা সুলতানা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জোয়াইরিয়া খান মিথিলা।

এছাড়াও সেরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পুরস্কার দেওয়া হয় সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুমাইয়া ইসলাম, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তানিয়া সুলতানা ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশিকুর রহমানকে।

ইভেন্টে সেরা সংগঠক হিসেবে চারজনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। তারা হলেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যামেলিয়া খান, হুরে জান্নাত বিনতে তফিক ও শিলমুন নাহার মুন এবং সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসমাইল হোসেন।

এফকে