জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণ বিশ্বের শোষিত নির্যাতিত মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস। এ ভাষণে তিনি সাড়ে সাত কোটি বাঙালির কথা বলেছেন, ঐক্যের সূতায় গেঁথেছেন। একারণে আজও মানুষ পোশাকে মুজিব কোট পরতে চায়। আমরা বঙ্গবন্ধুর মতো প্রবল ব্যক্তিত্বের মানুষ হতে চাই। সাহসী মানুষ হতে চাই। অকুতোভয়, বিপ্লবী মানুষ হওয়ার জন্য আমরা বারবার বঙ্গবন্ধুর কাছে ফিরে যাই। ক্যারিশম্যাটিক বঙ্গবন্ধু আধুনিকতায়ও অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক।  

মঙ্গলবার (৭ মার্চ) গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসের সিনেট হলে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত ‘৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, বাংলাদেশ জাতিরাষ্ট্রের সৃষ্টি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।

ড. মশিউর রহমান বলেন, কৌমভিত্তিক মানুষের বসতির সময়ে স্বয়ং সম্পূর্ণ গ্রামীণ অর্থনীতি ছিল। এসময়ে অনেক বাড়তি উৎপাদন না থাকলেও প্রয়োজন মিটিয়ে কিছুটা ভালো থাকা, অন্যের হস্তক্ষেপ না থাকার স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন মানুষের ছিল। ব্রিটিশ বাণিজ্য শক্তি যখন এখানে আশা শুরু করল, ট্রান্সফরমেশনে বাড়তি উৎপাদন শুরু হলো। সেই বাড়তি উৎপাদনের সুযোগটি নিয়েছিল ব্রিটিশ। সেই জায়গায় স্বয়ং সম্পূর্ণ গ্রামীণ অর্থনীতিতে পরিবর্তন যেমন এসেছে, আবার আগ্রাসনও এসেছে। সে হিসেবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ একটি প্রবল আগ্রাসন। গান্ধীর জাতীয়তাবাদী নেতা হয়ে উঠার পেছনে সেই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো যদি একটি উপমা হয়, তাহলে বঙ্গবন্ধু এ উপমহাদেশে জাতীয়তাবাদী নেতার এক অনন্য শুধু উদাহরণ নয়- আধুনিক জাতিরাষ্ট্র প্রবর্তনের একজন মাইলফলক নেতা তিনি।

তিনি বলেন, আগামী দিনে জাতীয়তাবাদ প্রকৃত অর্থে যদি আরও দুর্বল হয়ে ওঠে। ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদ যদি আরও প্রবল হয়, জাতীয়তাবাদী অনুপ্রেরণায় অনেক ক্ষেত্রে দুর্বলতা দেখা দেয় এবং ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদ অনেক বেশি বিকাশ ঘটে তাহলে কী বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশমার জায়গা দুর্বল হয়ে উঠবে? সেই প্রশ্নের উত্তর যদি আমরা খুঁজি তাহলে যেটি পাই তা হচ্ছে- ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদের বিকাশ যত ঘটবে, বঙ্গবন্ধু ততবেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে। জাতীয়তাবাদের প্রতিস্থাপন যদি ব্যক্তিস্বাতন্ত্রবাদের মধ্য দিয়ে হয়, তখনও বঙ্গবন্ধু সমকালীন হবেন। এটিই বঙ্গবন্ধুর ক্যারিশমার অনন্য দিক। আমাদের পথচলায় বঙ্গবন্ধু আমাদের সারা জীবনের সাথী। তিনি জাতিরাষ্ট্র সৃষ্টির শুধু মহানায়ক তা নয়, তিনি মুক্তির কথা বলেছেন। তার সেই মুক্তির অমিয় বাণীর কারণেই আমরা আজ লাখো শরণার্থীকে আশ্রয় দেই। আগামীর পথ চলায় বঙ্গবন্ধু থাকবেন সারাজীবন, সারাক্ষণ।

এমএম/এফকে