ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাকসুদ কামাল বলেছেন, আমার জীবনে যা কিছু অর্জন, যত সাফল্য সবকিছু আমার মায়ের অবদান।

রোববার (১৪ মে) বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। 

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, আমার জীবনের যা কিছু অর্জন সবকিছুর পেছনে আমার মা। আমার বড় হওয়া, আজকের এ পর্যায়ে আসা পুরোটাই মায়ের অবদান। বাবার ভালোবাসা, মায়া-মমতা ছিল কিন্তু পড়াশোনা থেকে শুরু করে সবকিছুর উৎস ছিলেন আমার মা। এখন আমার সবচেয়ে বড় আক্ষেপের জায়গা হলো মাকে হারিয়ে ফেলা, মা ডাকতে না পারা।

স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমার মা খুব বেশি পড়াশোনা করেননি তবে আমাদের পড়াশোনায় খুব সিরিয়াস ছিলেন। প্রত্যেকদিন সন্ধ্যার পরে আমাকে পড়াতে বসাতেন। আমাদের সবার পড়াশোনার প্রতি খুবই আন্তরিক ছিলেন। আমার বাবা তো ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি তার মতো ছিলেন। পরিবারকে গুছিয়ে রাখার দায়িত্ব পালন করেছেন মা।

আমি যখন নেদারল্যান্ডসে মাস্টার্স করছিলাম তখন আমার বাবা অসুস্থ ছিলেন। বাবা মাকে বলেছেন আমাকে যাতে না জানায়। আমার পড়াশোনা ক্ষতি হবে ভেবে মা আমাকে জানাননি। আমার পড়াশোনার প্রতি উনার এত পরিমাণ নজর ছিল। 

তিনি বলেন, আমার মায়ের স্মৃতি শক্তি ছিল খুবই প্রখর। তিনি ৮৬ বছর বয়সে মারা গেছেন। শেষ ৬ মাস স্মৃতি শক্তি ছিল না। কিন্তু এর আগে শৈশব থেকে শুরু করে সবকিছু উনার মনে থাকত, যেটা আমাদেরও থাকত না। জমিজমা থেকে শুরু করে সবকিছু উনার নখদর্পণে থাকত এবং সবকিছু আগলে রাখতেন। শেষ জীবন পর্যন্ত তিনি নিজে রান্না করতেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হওয়ার পর তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন উল্লেখ করে ঢাবি প্রো-ভিসি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার পর আমার মা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন। আমার সুযোগ ছিল দেশের বাইরে সেটেল হওয়ার কিন্তু মা রাজি ছিলেন না। আমার মা চাইতেন আমি দেশে থাকি, দেশে থেকে মানুষের পাশে থাকি। তাই তিনি আরও বেশি খুশি হয়েছিলেন।

তিনি বলেন, আমার জীবনে আমার মায়ের প্রভাব অনেক বেশি। এখন পর্যন্ত আমি কোনো বিপদে পড়লে, সংকটে পড়লে কিংবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে, তখন মায়ের কথা স্মরণ করলে সব কিছুর সমাধান পেয়ে যাই। অর্থাৎ এখন পর্যন্ত মা আমার শক্তি হয়ে রয়েছেন।

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, শুধু পড়াশোনা করবা, সৎকাজ করব। এর বাইরে আর কিছু যেন তোমার দ্বারা না হয়। বিশেষ করে কারো ক্ষতি যেন তোমার দ্বারা না হয়। মা সবসময় এসব উপদেশ দিতেন। যেটা আমি মেনে চলার চেষ্টা করি।

এইচআর/এসকেডি