চাকরি স্থায়ীকরণের জন্য এক দফা দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য একিউএম মাহবুব, প্রক্টর মো. কামরুজ্জামানকে, কোষাধ্যক্ষ মোবারক হেসেন, রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমানকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে চুক্তিভিত্তিক ১৩৪ জন কর্মচারী। অবরুদ্ধ করার সাড়ে তিন ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সদস্যরা উপাচার্যের দপ্তরের প্রধান ফটকের লোহার গেট ভেঙে উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি কর্মকর্তাদের অবমুক্ত করেন। এদিকে রাতেও আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মচারীরা।

বুধবার (১৭ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দপ্তরের সামনের প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীরা এ কর্মসূচি শুরু করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কিউ এম মাহবুব, প্রক্টর মো. কামরুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন ও রেজিস্ট্রার দলিলুর রহমান অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।

পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত কর্মচারীদের ভিসিসহ অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের অবমুক্ত ও আন্দোলন থেকে সরে যেতে অনুরোধ জানায়। এ সময় আন্দোলনরত কর্মচারীরা কর্মচারী সমিতির নেতাকর্মীদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলে সমিতির সদস্যরা ড্রিল মেশিন ও গেট ভাঙার সরঞ্জামাদি দিয়ে উপাচার্যের দপ্তরের লোহার কেচিগেট ভেঙে ভিসিসহ অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের অবমুক্ত করেন।

এদিকে আন্দোলনরত কর্মচারীরা বলছেন, তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই আন্দোলন চলবে।

অবস্থান কর্মসূচি পালনকারী মোহাম্মাদ আলি বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতির সদস্যরা হামলা করে গেট ভেঙেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রয়েছে তারা থাকতে কেন এই সমিতির সদস্যরা গেট ভাঙতে আসবে? কি এত স্বার্থ তাদের? নাকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্মচারী সমিতির নেতাদের লেলিয়ে দিয়েছেন?

তিনি আরও বলেন, আমরা চুক্তিভিত্তিক চাকরি করি। এর মধ্য থেকে ১৮ জনের চাকরি স্থায়ী হয়েছে। অবশিষ্ট ১৩৪ জনের মানবেতর জীবন যাপন করছি। মাসে ৫ হাজার টাকা দিয়ে কিছুই হয় না। আমাদের দাবি আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হোক। চাকরি স্থায়ীকরণ না করলে আমরা অবস্থান কর্মসূচি থেকে উঠব না। অবস্থান কর্মসূচি পালন করার সময় কোহিনুর নামের একজন অসুস্থ হয়ে পড়ে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী সমিতির সভাপতি মো. তরিকুল ইসলামের কাছে গেট ভাঙার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের স্থায়ী কর্মচারীদের নীতিমালা সংশোধনের কার্যক্রম চলমান। আগামীকাল ঢাকায় নীতিমালা সংশোধনের রিভিউ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবে। চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের আন্দোলনের জন্য স্থায়ী কর্মচারীদের নীতিমালা সংশোধনের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় গেট ভেঙে ফেলা হয়েছে।

রেজিস্ট্রার দলিলুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, ২০ মে গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে উপাচার্যের দপ্তর সভা চলছিল। এসময় চুক্তি ভিত্তিক কর্মচারীরা গেটে তালা বন্ধ করে দেয়। প্রক্টরাল বডি তাদের সঙ্গে কথা বলেও তারা কোন কিছু মানতে নারাজ। তারা চাকরি স্থায়ীকরণ চায়। চাকরি স্থায়ীকরণ আমাদের হাতে না। উপাচার্যের দপ্তরের প্রধান ফটকের গেট কারা ভেঙেছে তা আমরা তদন্ত করে দেখব। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কামরুজ্জামান বলেন, আমরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছি। আশা করি দ্রুতই সমাধান হবে।

আশিক জামান/আরকে