ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রায় ১০ মাস ধরে কারাগারে আছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরা। খাদিজাসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারদের মুক্তির দাবিতে সাংস্কৃতিক সমাবেশ করে কয়েকটি সংগঠন। আসন্ন ঈদুল আজহার আগেই খাদিজাসহ সবার মুক্তির দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।

শনিবার (২৪ জুন) রাজধানীর পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কে প্রতিবাদী সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর ব্যানারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সমাজ চিন্তা ফোরামের আহ্বায়ক কামাল হোসেন বাদলের সভাপতিত্বে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কামাল হোসেন বাদল বলেন, আমাদের শিল্পীরা, সাংস্কৃতিক কর্মীরা তাদের সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারছে না। শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু পরিবেশে শিক্ষালাভের সুযোগ পাচ্ছে না। এসব অপকর্মকে দাবিয়ে রাখার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামের কালো আইন তৈরি করা হয়েছে। এসময় তিনি অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিলেরও সমালোচনা করেন।

ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্ক ও পার্কের ঐতিহ্য সংরক্ষণ সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব আক্তারুজ্জামান খান বলেন, খাদিজকে গ্রেপ্তার করল কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ঈদের আগে খাদিজার মুক্তি দিতে হবে। না হলে প্রমাণিত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রশাসন রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করছে না।

সমাবেশে প্রতিবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো– ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী খাদিজাসহ গ্রেপ্তার সব বন্দির মুক্তি; ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বিল’ আইনের নামে ধর্মঘট করার চক্রান্ত পরিহার; নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানো ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কঠোর শাস্তি; ঐতিহাসিক বাহাদুর শাহ পার্কের পরিবেশ ধ্বংসকারী রেস্তোরাঁ উচ্ছেদ; গ্যাস-বিদ্যুৎ-ডিজেলের সরবরাহ নিশ্চিত ও সব জ্বালানির বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করা; ঘুষ, দুর্নীতি বন্ধ করা ও ঋণখেলাপি, অর্থপাচারকারীদের গ্রেপ্তার এবং লোহারপুল-বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালু করা।

প্রসঙ্গত, খাদিজা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। একটি মামলা রাজধানীর কলাবাগান থানায়, অপরটি নিউমার্কেট থানায়। দুটি মামলার বাদীই পুলিশ। গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খাদিজাকে গ্রেপ্তার করে নিউমার্কেট থানা পুলিশ। তখন থেকে তিনি কারাগারে।

এমএল/এসএসএইচ/