নারীনেত্রী এন্টি চাকমা এবং দুই কলেজ শিক্ষার্থী কর্নিয়া চাকমা ও নিশা চাকমাকে অপহরণের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), হিল উইমেন্স ফেডারেশন (এইচডব্লিউএফ) ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ)।

রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা অপহরণের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে অপহরণকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। 

নারীনেত্রী নীতি চাকমা বলেন, দিবালোকে এন্টি চাকমাসহ তিন জনকে অপহরণ বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয় বরং এটি রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মদদে হয়েছে। সেনা সদস্য কর্তৃক কাপ্তাইয়ের স্কুল ছাত্রীর ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার লক্ষ্যে এবং চলমান আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে তাকে অপহরণ করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সালের ১৮ মার্চ রাঙামাটির কুদুকছড়ি থেকে সেনা সহায়তায় নব্য মুখোশ বাহিনীর সন্ত্রাসীরা সশস্ত্র হামলা চালিয়ে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মন্টি চাকমা ও সদস্য দয়া সোনা চাকমাকে অপহরণ করেছিল। মন্টি এবং দয়াসোনাকে অপহরণকারী সন্ত্রাসীদের বিচার না হওয়ায় পুনরায় একই ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। 

তিনি অবিলম্বে হিল উইমেন্স ফেডারেশন নেত্রী এন্টি চাকমাসহ ৩ জনকে অপহরণের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। 

গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিকো ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অপহরণ, মুক্তিপণ, খুন, হত্যা, ধর্ষণ প্রতিনিয়ত ঘটছে। এসবের বিরুদ্ধে পাহাড়ে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং তারা সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দিয়ে যাচ্ছে। 

পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। পুনর্বার ক্ষমতায় টিকে থাকতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো দিয়ে অন্যায় ধরপাকড় ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জনগণের ওপর নিপীড়ন নির্যাতন জারি রেখেছে। নাগরিকের মত প্রকাশের অধিকারকে দমন করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের শিরোনাম সংশোধন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করেছে। এ সাইবার নিরাপত্তা আইনও জনগণের ওপর নিপীড়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের বিরাজমান অরাজক পরিস্থিতির উত্তরণের জন্য এ কালো আইন বাতিলসহ শাসকগোষ্ঠী সকল অন্যায়, অত্যাচার ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে পাহাড় সমতলে সকল গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন— উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিকো ত্রিপুরা, ইউনাইডেট ওয়ার্কার্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রমোদ জ্যোতি চাকমা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা ও সাংগঠনিক সম্পাদক শুভাশীষ চাকমা। 

এমএ