নারী-পুরুষের সমতা তুলির আঁচড়ে ফুঁটিয়ে তুলতে হবে : জবি উপাচার্য
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারে বলা আছে আমরা সবাই সমান। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ এখনো সমান নয়, নারীদের এখনো দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক মনে করা হয়। অজস্র শিল্পী, লেখক, কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক, মুক্তিযোদ্ধা এই আইডেনটিটি সংগ্রামটা করেছিল, তুলির আঁচড় দিয়ে এগুলো ফুঁটিয়ে তুলতে হবে। আমি খুব গর্বিত আমি বাঙালি, আমাকে যদি এমন সুযোগ দেওয়া হতো– আরেকবার জন্ম নিতে পারতাম, আমি বাঙালি নারী হয়ে জন্ম নিতাম।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের আয়োজনে একাডেমিক ভবনের নিচতলায় ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বিজয় গাথা’ শীর্ষক আর্ট ক্যাম্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
উপাচার্য বলেন, বিজয়ের গাম্ভীর্য, উল্লাস, উচ্ছ্বাস সবকিছুর সঙ্গেই চারুকলার যোগ রয়েছে। আমাদের পরিচিতি বিভিন্ন রাজনৈতিক আবহে পরিবর্তন হয়ে গেছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের বাঙালি পরিচয়কেও হত্যা করা হয়। ধর্মের ভিত্তিতে দেশ বিভাগ হলেও পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সমাজ ও সংস্কৃতির মিলের চেয়ে ভিন্নতাই বেশি ছিল, আমাদের সংবিধানের জাতীয়তাবাদ- সবাই মনে করেছিল আমরা উগ্র জাতীয়তাবাদে যাচ্ছিলাম কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেটা বিশ্বাস করেননি।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহা. আলপ্তগীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ূন কবীর চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সৃজনশীলতা সৃষ্টির জন্য চারুকলা বিভাগের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। আর চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা সৃজনশীল বলেই এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা কখনো মৌলবাদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পারে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, দেশ স্বাধীনের আগে ও পরে সব আন্দোলনে শিল্পীরা সবসময় পাশে ছিলেন। আর নতুন কিছু সৃষ্টি করতে হলে শিল্পচেতনা থাকতে হয়। সাধারণ মানুষ থেকে আধুনিক মানুষরা বেশি লেবাসধারী হয়ে থাকে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা যাতে রক্ষা পায় আমাদের এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য ও সঞ্চালনা করেন চারুকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বজলুর রশীদ খান।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যান, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, প্রক্টর, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
আর্ট ক্যাম্পে তৈরি শিল্পকর্মগুলোর প্রদর্শনী উদ্বোধন হবে ১৮ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায়। প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করবেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এমএল/এসএসএইচ